• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
আইসিবিআই ব্যাংকের এসভিপি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হলেন বাঁশখালীর মান্নান আশরাফ ফকির হত্যা: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, স্ত্রী-ছেলে কারাগারে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেড় বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে : আমীর খসরু ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁশখালীর যুবকের মৃত্যু বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অনুপস্থিত শীর্ষ নেতারা এনসিপির দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন বাঁশখালীর মিশকাত বাঁশখালী নিয়ে লেয়াকত আলীর ধারাবাহিক লেখনী ভাইরাল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন কঃ – প্রেমের বাদশাহর রাজকীয় উপাখ্যান বাঁশখালীতে গণঅধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

পুইছড়ী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় বিতর্ক প্রতিযোগিতা

রিপোর্টার নাম: / ২৬ শেয়ার
আপডেট: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বুধবার চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার অন্তর্গত পুইছড়ী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় এক আনন্দঘন ও জ্ঞানসমৃদ্ধ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো পুইছড়ী মাদ্রাসা ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীদের মাঝে যুক্তি-তর্কের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে উৎসাহিত করার জন্য এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, যা মাদরাসার শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মানিত অধ্যক্ষ, শিক্ষকবৃন্দ এবং ছাত্রছাত্রী।
বিতর্কের বিষয় ছিল, “সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিমুখ করছে।” এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দুইটি দল—একটি দল ছিল বিষয়টির পক্ষে এবং অন্যটি বিপক্ষে।

অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন মাদরাসার মান্যবর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোশাররফ হোছাইন। তিনি তার উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা-চেতনার জগৎকে আরও প্রসারিত করবে এবং তাদের মধ্যে জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ও অনুসন্ধিৎসা জাগ্রত করবে।” তিনি আরও বলেন, “বিতর্কের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি একটি গভীর দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে পারে, যা তাদের একাডেমিক এবং বাস্তব জীবনে অনেক উপকারে আসে।”

প্রতিটি দলে তিনজন করে সদস্য ছিল। পক্ষ দলের সদস্যরা হলো আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী এলিজা বেগম, দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া সোলতানা এবং আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী জারিন তাছমিন পায়েল (দলনেতা)। বিপক্ষ দলের সদস্যরা হলো আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ রিসাত, আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওবাইদুল্লাহ মোহাম্মদ ছালেহ এবং আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র তানজীদুল ইসলাম আরফাত (দলনেতা)। তারা অত্যন্ত সাবলীলভাবে তাদের নিজ নিজ পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। বিষয়ের পক্ষে দলের যুক্তি ছিল যে, সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত এবং অপব্যবহার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগহীন করে তুলছে, যার ফলে তাদের একাডেমিক পারফরম্যান্স ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, বিপক্ষ দলের যুক্তি ছিল যে, সোশ্যাল মিডিয়া সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের প্রসার এবং যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

বিতর্ক অনুষ্ঠানটিতে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন মাদ্রাসার বাংলা প্রভাষক আবু সৈয়দ মু. ফয়সাল। তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পুরো প্রতিযোগিতাটি পরিচালনা করেন। বিচারক প্যানেলে দায়িত্ব পালন করেন ইসলামের ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন, বাংলা প্রভাষক হাজেরা খাতুন এবং অর্থনীতির প্রভাষক রেহানা খাতুন। তিনজন বিশিষ্ট বিচারক উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতার প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণ করেন। বিচারকরা প্রতিটি দলের উপস্থাপনা, তথ্যের সঠিকতা, ভাষার সাবলীলতা এবং যুক্তির ধারাবাহিকতা মূল্যায়ন করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে বিপক্ষ দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রধান বিচারক সহকারী অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন। বিচারকদের মতামত অনুযায়ী, বিপক্ষ দলের যুক্তি উপস্থাপনা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তথ্যসমৃদ্ধ, যা তাদের জয়ী হতে সহায়তা করে। শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হয় বিপক্ষ দলের আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র তানজীদুল ইসলাম আরফাত (দলনেতা)।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে মডারেটর বলেন, “এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তির উন্নয়ন ঘটায় এবং তাদেরকে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত করে।”

অনুষ্ঠানে মাদরাসার মান্যবর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোশাররফ হোছাইন ঘোষণা করেন যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তিবিদ্যা ও বিশ্লেষণী ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ ধরনের বিতর্ক প্রতিযোগিতা ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হবে। এ ধরনের বিতর্ক প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত কাজের মানসিকতা, বিশ্লেষণ ক্ষমতা, এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকবৃন্দ ভবিষ্যতে আরও বেশি এমন শিক্ষণীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

প্রতিযোগিতাটি শেষ হওয়ার পর, শিক্ষার্থীরা এই অভিজ্ঞতাকে তাদের ব্যক্তিগত এবং শিক্ষাগত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করে, এ ধরনের উদ্যোগ তাদের ভবিষ্যত জীবনে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময় মাদরাসার হলরুম ছিল শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং উৎসাহে ভরপুর। শিক্ষার্থীরা গভীর মনোযোগের সাথে প্রতিটি দলের উপস্থাপনা শুনে এবং তাদের প্রিয় দলের জন্য উত্সাহ প্রদান করে। অনুষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের মাঝে এক নতুন উদ্দীপনার সঞ্চার করে এবং তাদের মধ্যে দলগত কাজের গুরুত্ব, নেতৃত্বের গুণাবলী এবং সহনশীলতার মানসিকতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ
সিবি হসপিটাল কী? কেন? কিভাবে?