✒️ কল্যাণ বড়ুয়া
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চেচুরিয়া গ্রামে সফল চাষী বদিউল আলমের মাঠে বর্তমানে রঙিন ফুলকপির (হলুদ ও গোলাপি) ব্যাপক চাষ চলছে। এই রঙিন ফুলকপি দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে উঠেছে, এবং চাষী বদিউল আলম জানান, রবিবার থেকে বাজারে বিক্রি শুরু হবে। তিনি অল্প জমিতে নানা ধরনের সবজি চাষ করে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। তার চাষে ব্যবহৃত রঙিন ফুলকপি জাতগুলো হলো ক্যারেনটিনা (হলুদ) এবং ভ্যালেনটিনা (গোলাপি)।
তিনি জানান, বাঁশখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ওচমান গনি ছিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে এই চাষাবাদ করা হচ্ছে। এ মাঠে ক্যারেনটিনা (হলুদ), ভ্যালেনটিনা (গোলাপি) এবং স্নো হোয়াইট (সাদা) ফুলকপি তিনটি জাতের চাষ হচ্ছে। ৫০ শতক জমির মধ্যে স্নো হোয়াইট চাষ হয়েছে ৪০ শতক এবং রঙিন ফুলকপি (ক্যারেনটিনা ও ভ্যালেনটিনা) ১০ শতকে চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে সাদা ফুলকপির বিক্রি শেষ, তবে রঙিন ফুলকপি বিক্রির মাধ্যমে ভালো লাভের আশা করছেন চাষী।
এসএসিপি (SACP) প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী হিসেবে ৫০ শতক জমিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন সার, বীজ, পরিচর্যা খরচসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করেছে। চাষী বদিউল আলম জানান, রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর চাহিদা অনেক বেশি, এবং এখন অনেকেই বুকিং দিয়ে রেখেছেন। সাদা ফুলকপি যেখানে প্রতি পিস ১০ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে রঙিন ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ৮০০ পিস রঙিন ফুলকপি হাতে রয়েছে, যা প্রতি পিস ৫০ টাকায় বিক্রি করলে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রবি মৌসুমে ক্যারেনটিনা এবং ভ্যালেনটিনা রঙিন ফুলকপি চাষে বীজতলা থেকে শুরু করে সবজি সংগ্রহ করতে ৭০-৭৫ দিন সময় লাগে। রঙিন ফুলকপি দেখতে সুন্দর এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, যা প্রচলিত সাদা ফুলকপির তুলনায় অনেক ভালো।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু সালেক জানান, “সাদা ফুলকপির তুলনায় রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। হলুদ ফুলকপিতে ক্যারোটিনয়েড থাকে, বেগুনি ফুলকপিতে অ্যান্থোসায়ানিন থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।” তিনি আরও বলেন, রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন A, B, C, আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি, যা মানুষের রক্ত এবং হাড় গঠনে সহায়তা করে।
এ প্রসঙ্গে চাষী বদিউল আলম জানান, বাঁশখালী অঞ্চলে উর্বর জমির কারণে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়, এবং এখানে রঙিন ফুলকপির চাষ ভবিষ্যতে আরও জনপ্রিয় হবে।