• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
আইসিবিআই ব্যাংকের এসভিপি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হলেন বাঁশখালীর মান্নান আশরাফ ফকির হত্যা: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, স্ত্রী-ছেলে কারাগারে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেড় বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে : আমীর খসরু ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁশখালীর যুবকের মৃত্যু বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অনুপস্থিত শীর্ষ নেতারা এনসিপির দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন বাঁশখালীর মিশকাত বাঁশখালী নিয়ে লেয়াকত আলীর ধারাবাহিক লেখনী ভাইরাল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন কঃ – প্রেমের বাদশাহর রাজকীয় উপাখ্যান বাঁশখালীতে গণঅধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

শেখ মরতুজা আলী চৌধুরী; সকলের প্রিয় ছোট মিয়া

রিপোর্টার নাম: / ৭১ শেয়ার
আপডেট: রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪

মোহাম্মদ আছেফুর রহমান ফারুকী ▪️

শেখ মরতুজা আলী চৌধুরী (ছোট মিয়া), জন্ম ১৯৩০ সালের ৩০ এপ্রিল। ১৯৪৯ সালে তার বয়স যখন ১৯ তখন তিনি ৮নং জলদী ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম প্রেসিডেন্ট বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি টানা ৩৪ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন যা বর্তমানের জন্যে একটি বিরল ঘটনা। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি শিক্ষাকে জাগ্রত করার জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করেন।

বাঁশখালীর প্রখ্যাত জমিদার সমাজহিতৈষী মানবতাবাদী পরোপকারী ব্যক্তিত্ব, বাঁশখালী আলাওল ডিগ্রি কলেজ, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা। বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী, আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার অগ্রনায়ক, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযুদ্ধা শেখ মরতুজা আলী চৌধুরী সকলের কাছে ছোট মিয়া নামে পরিচিতি ছিল। তিনি স্বর্ণ আর নিজ জমি বিক্রি করে বাঁশখালী আলাওল ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন মসজিদ ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নিজের জমি ও টাকা দিয়ে। তিনি মনকিচরের অনগ্রসর শিক্ষাকে প্রতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার জন্য সম্পূর্ণ নিজের জমিতে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়ের খরচ বহন করার জন্য ২টি বড় পুকুরও দান করেন। বাংলাদেশের দানবীরের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম ব্যতিক্রম। তিনি কোন প্রতিষ্ঠান নিজের নামে, মা-বাবার নামে, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা কারো, নামে প্রতিষ্ঠা করেননি। মহা কবি আলাওলের নামে কলেজ এবং বঙ্গবন্ধুর নামে স্কুল দেন। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হল- বাঁশখালীতে থানা, উপজেলা, তহসিল অফিস, ইউএনও অফিস, হাঁসপাতাল ডাক বাংলোসহ অসংখ্য সরকারি অফিস প্রতিষ্ঠা করেন সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে। ওনার জীবনে সব চেয়ে বিরল ঘটনা হল ওনি সরকারি বেসরকারি শত শত মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন লুঙ্গি পরে। জীবনে কোন দিন প্যান্ট বা পায়জামা পরেনি। একদিন তিনি সচিবালয়ে গিয়েছিলেন- তখনকার এলজিইডি মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে। লুঙ্গি পরা থাকায় ওনাকে গেইটে প্রবেশ করতে দেয়নি। মন্ত্রীর এপিএস ঘটনা জানতে পেরে তিনি নিজেই এসে ওনাকে নিয়ে যান। তিনি বহু বার সচিবালয়ে গেছেন লুঙ্গি পরে। বাঁশখালীতে নারী-পুরুষের শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে যার সব চেয়ে বেশি অবদান তিনি হলেন এক মাত্র ছোট মিয়া।

তিনি ছিলেন সেরা ক্রীড়াবিদ। ফুটবল ছিল তাঁর নিত্য সাথী। জলদী হাই স্কুল মাঠে প্রতি বছর ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করতেন এবং নিজেই সব খেলা (রেফারী হিসাবে) পরিচালনা করতেন। ওনার রেফারীর স্টাইল বিভিন্ন নাচন ভঙ্গিমা দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শক হত। যে দিন ওনি খেলার রেফারী ছিল সেই দিন বাড়তি দর্শকের চাপ থাকত। তিনি ছিলেন একজন খাঁটি বীরমুক্তিযোদ্ধা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ওনার অসংখ্য বন্ধুর মধ্যে অন্যতম হল- অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ছিদ্দিক ফারুকী, এ.টি.এম আজগর হোছাইন, মও. ওসমান গনি ও মও. বেদার আহমদ। সর্বগুণে গুনান্নিত শেখ মরতুজা আলী চৌধুরী ছিলেন বাঁশখালীর সর্বস্তরের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র। বাঁশখালী উপজেলা তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিশিষ্ট জমিদার, শেখ ওয়াজেদ আলী, চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র মরহুম শেখ মর্তুজা আলী চৌধুরী (ছোট মিয়া) ১৯৯৬ সালের ১৪ জুলাইয়ের এই দিনে ছোট মিয়া মহান স্রষ্টার ইচ্ছায় দুনিয়ার সফর শেষ করেন। মৃত্যু যবনিকার পরে এই পৃথিবীর মানুষের মনে খুব কম মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন। সেই কম মানুষের একজন সকলের প্রিয় ছোট মিয়া।
মৃত্যু বার্ষিকীতে বাঁশখালীর সাধারন হিতকামী জনগণের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ
সিবি হসপিটাল কী? কেন? কিভাবে?