দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনা হবে। এরপর মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। তবে চলতি বছরের প্রাথমিক সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দিতে চায় সরকার। শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব পরিকল্পনাই নির্ভর করছে আগামী এক মাসে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায়। অন্যদিকে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তাদেরকে বিকল্প পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তাব করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে তাদের রেজিস্ট্রেশন বা ফরম পূরণের ডকুমেন্ট দিয়ে ভ্যাকসিন দেয়া যায় কিনা সেটিও ভাবছে সরকার। এ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ। সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে না। তাই এবার প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে না। সরকারের পলিসি হলো, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে, একসঙ্গে না খুলে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খুলে আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে নেয়া হবে। এরপর ধাপে ধাপে কলেজ ও বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়ার ওপর।
সম্প্রতি শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইরাবের একটি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে পিছু হটতে হয়েছে। করোনার এখন যে সংক্রমণ চলছে সেটা কমে আসলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা স্কুলগুলো খুলে দিতে চাই। সরাসরি ক্লাস শুরু করা খুব দরকার। স্কুল খুলে দেয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তদারকিতে প্রাথমিক শিক্ষকরা বেশিরভাগই কভিড-১৯ এর টিকা নিয়েছেন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে প্রতি দুদিন অন্তর বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ক্লাসরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা সেটি করছেন। ভ্যাকসিন কার্যক্রমও জোরেশোরে চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খোলা হবে তা আগাম বলতে চাই না। পরিস্থিতি যখনই অনুকূলে আসবে যখনই ঘোষণা দেয়া হবে।