• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১১ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
আইসিবিআই ব্যাংকের এসভিপি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হলেন বাঁশখালীর মান্নান আশরাফ ফকির হত্যা: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, স্ত্রী-ছেলে কারাগারে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেড় বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে : আমীর খসরু ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁশখালীর যুবকের মৃত্যু বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অনুপস্থিত শীর্ষ নেতারা এনসিপির দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন বাঁশখালীর মিশকাত বাঁশখালী নিয়ে লেয়াকত আলীর ধারাবাহিক লেখনী ভাইরাল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন কঃ – প্রেমের বাদশাহর রাজকীয় উপাখ্যান বাঁশখালীতে গণঅধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

জাপানে ঘরজামাই হওয়ার সুযোগ: আবেদন করতে পারেন আপনিও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ৫২৮ শেয়ার
আপডেট: শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জাপানে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে দত্তক নেওয়ার প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চালু আছে। হয়তো অনেকেরই জানা নেই, বিশ্বের সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান—সুজুকি, টয়োটা কিংবা কিক্কোমানের মতো ধনী পরিবারগুলো নিজেদের ব্যবসা ও উত্তরাধিকার ধরে রাখতে ঘরজামাই দত্তক নেওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। পাশ্চাত্যে যেখানে শিশু দত্তক নেওয়াই বেশি প্রচলিত, সেখানে জাপানে এর বিপরীতে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদেরকেই দত্তক নেওয়া হয়, এবং এটি সম্পূর্ণ বৈধ ও স্বীকৃত প্রথা।

ব্যবসা ও বংশরক্ষার কৌশল :
জাপানের বহু শতাব্দী-প্রাচীন পারিবারিক কোম্পানি আজও টিকে আছে মূলত এই প্রথার কারণে। যদি কোনো পরিবারের যোগ্য পুত্র না থাকে বা থাকলেও তাকে উত্তরাধিকারী হিসেবে উপযুক্ত মনে না হয়, তখন ধনী পরিবারগুলো যোগ্য প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে দত্তক নেয়। যেমন—সুজুকি মোটর করপোরেশনের ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে চারজন প্রধানই ছিলেন দত্তক নেওয়া উত্তরাধিকারী। এর মধ্যে সর্বশেষ প্রয়াত ওসামু সুজুকিও ছিলেন দত্তক ঘরজামাই।

নিনটেনডো, কিক্কোমান এবং টয়োটা—এই বিশাল প্রতিষ্ঠানগুলোও একই প্রথা অনুসরণ করেছে। পরিসংখ্যান বলছে, দত্তক গ্রহণের দিক থেকে জাপান যুক্তরাষ্ট্রের পরেই অবস্থান করছে, আর এর ৯০ শতাংশই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণদের বেছে নেওয়া হয়।

মুকোয়োশি: জাপানি প্রথা :
ঘরজামাই দত্তকের জন্য ব্যবহৃত শব্দটি হলো মুকোয়োশি। এ প্রথায় মেয়ের স্বামীকে দত্তক নিয়ে শ্বশুরবাড়ির পদবি দেওয়া হয় এবং ব্যবসার মালিকানাও তার হাতে যায়। ফলে পারিবারিক নাম ও ঐতিহ্য প্রজন্ম ধরে টিকে থাকে।

কর ও উত্তরাধিকার সুবিধা:
দত্তক প্রাপ্তবয়স্ককে সম্পদ হস্তান্তর করলে করের বোঝা তুলনামূলকভাবে অনেক কমে যায়। নিঃসন্তান দম্পতিরা তাই প্রায়ই উত্তরাধিকার নির্ধারণে এই পথ বেছে নেন।

দত্তক গ্রহণ প্রক্রিয়া:
আইনি নথিভুক্তি: দত্তক নেওয়া হলে সরকারি পারিবারিক রেকর্ড কোসেকি-তে নিবন্ধিত হয় এবং দত্তকপ্রাপ্ত ব্যক্তি নতুন পরিবারের পদবি গ্রহণ করে।
যোগ্যতা ও সম্মতি: উভয়ের সম্মতি আবশ্যক। দত্তক হওয়ার জন্য অন্তত ১৫ বছর বয়স হতে হবে এবং দত্তকদাতার চেয়ে ছোট হতে হবে।
দায়িত্ব: দত্তক সন্তানকে জৈবিক সন্তানের মতোই দায়িত্ব পালন করতে হয়, যার মধ্যে উত্তরাধিকার ও বয়স্ক অভিভাবকের দেখভালও অন্তর্ভুক্ত।

বিদেশিদের জন্য দত্তক গ্রহণ:
যদি দীর্ঘমেয়াদি বসবাসের অনুমতি থাকে, বিদেশিরাও জাপানে দত্তক হতে পারেন। তবে এজন্য আদালতের অনুমোদন প্রয়োজন। তবে মনে রাখতে হবে, দত্তক হওয়ার মাধ্যমে নতুন ভিসা বা নাগরিকত্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়া যায় না—এর জন্য আলাদা আবেদন করতে হয়।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব:
এ প্রথার কারণে পারিবারিক ব্যবসা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে টিকে আছে। যোগ্য উত্তরাধিকারী বেছে নেওয়ার সুবিধা থাকায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিতর্ক:
অনেকে এই প্রথাকে কৌশলগত ব্যবসা ব্যবস্থাপনা হিসেবে দেখছেন। তবে সমালোচকরা মনে করেন, বর্তমান সময়ে নারীরাও ব্যবসা ও রাষ্ট্রনায়কত্বে সমান দক্ষতা দেখাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র পুরুষকেই উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নেওয়া নিঃসন্দেহে সেকেলে দৃষ্টিভঙ্গি।

মুকোয়োশির আধুনিক প্রয়োগ:
জাপানে জন্মহার কমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী পরিবারে শুধুমাত্র কন্যাসন্তানই থাকছে। ফলে ঘরজামাই দত্তক নেওয়ার জন্য সেখানে বিশেষ ম্যাচমেকিং সেবা গড়ে উঠেছে। এমনকি জাপানে একটি প্রবাদও প্রচলিত আছে:
“ছেলে তুমি বেছে নিতে পারো না, কিন্তু জামাই তুমি বেছে নিতে পারো।”

তবে বাস্তবতা হলো, এখনো অনেক ধনী পরিবার পুরুষকেই যোগ্য উত্তরাধিকারী মনে করে ব্যবসার স্থিতিশীলতা ও পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষায় এই প্রথা ধরে রেখেছে। যদিও আজকের পৃথিবীতে নারীরা রাষ্ট্র থেকে শুরু করে বৈশ্বিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জাপানের এই দীর্ঘকালীন প্রথা এখনো অব্যাহত রয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, প্রজেক্ট নাইটফল (ইনস্টাগ্রাম), রিসার্চগেট /ছবি: ইনস্টাগ্রাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ
সিবি হসপিটাল কী? কেন? কিভাবে?