চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বড়ঘোনায় এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের ড্রেজিং কার্যক্রম বন্ধ ও সাগরে ব্রেকওয়াটার (পাথর ফেলে জেটি নির্মাণ) অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। একই সঙ্গে কয়লাবাহী লাইটার জাহাজ ভিড়ানোর কারণে স্থানীয় জেলেদের জীবিকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও করা হয়েছে।

গত বুধবার বাঁশখালীর গন্ডামারা বরগুনা বহুমুখী সমবায় সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এ রিট দাখিল করেন। এতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ সাইফুল আলম, এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাঁশখালী উপজেলা সহকারী ভূমি অফিসারসহ মোট ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ ফারুক হোসেন জানান, বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বহুদিন ধরে এ জেটিঘাট ছিল জেলেদের কর্মসংস্থানের প্রধান কেন্দ্র। প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার জেলে এখান থেকে নৌকা ও সাম্পান নিয়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যেতেন। কিন্তু কয়লাবাহী জাহাজ ভিড়ানো শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলেদের দাবি, জাহাজের ধাক্কায় প্রায়ই জাল ছিঁড়ে যাচ্ছে, সাম্পানের সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটছে, এমনকি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। এসব কারণে সম্প্রতি গন্ডামারা পশ্চিম বড়ঘোনা জেটিঘাট এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করে বলেন, এখন প্রতিদিন মাছ ধরতে তাদের ২০-৩০ কিলোমিটার দূরে যেতে হচ্ছে। আবার মাছ নিয়ে ফিরে আসার পর প্রকল্পের লোকজন ভাগ দাবি করে, না দিলে নৌকা ঘাটে ভিড়তে দেওয়া হয় না। এতে তাদের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
তাদের মতে, ইলিশ মৌসুমে চার মাসব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান ভরসা ছিল এ ঘাট। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এ অঞ্চলের অর্থনীতি এখন মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
জেলেরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবিকা ধ্বংসের মুখে। তাই অবিলম্বে নিরাপদে নৌকা ও সাম্পান ঘাটে ভিড়ার নিশ্চয়তা এবং স্থানীয়দের জন্য এস আলম গ্রুপে কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।