Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বাহারচরা নাকি বাহারছড়া? দ্ব্যর্থতা নিরসন

রহিম সৈকত ◾
গতকাল (৩০ আগস্ট, ২০২১) বাঁশখালী এক্সপ্রেস পরিবারের ফেসবুক গ্রুপে একটি প্রশ্ন রেখেছিলাম আমাদের সমুদ্র তীরবর্তী ইউনিয়নের নাম  বাহারচরা নাকি বাহারছড়া? প্রশ্নোত্তরে অংশ নেয়া তরুণদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সরকারি নথিতে, বাংলা পিডিয়ায়, জাতীয় তথ্য বাতায়নে এই ইউনিয়নের নাম বাহারছড়া আবার বিপরীত দিকে একই ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয়ের নাম বাহারচরা রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয় । এই নিয়ে দ্ব্যর্থতা দেখা দিলে আমরা পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রী কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বাহারচরা রত্নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষা সংগঠক জনাব মুজিবুর রহমান সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,”  বাহার শব্দের অর্থ সমুদ্র, চর মানে সমুদ্রবিধৌত ভূমি । যেহেতু সমুদ্র তীরবর্তী উপকূল এলাকা সেহেতু বাহারচরা নামকরণই শতভাগ শুদ্ধ।”

অভিধানে খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, আরবি
بهار
(বাহার) শব্দটির বাংলা অর্থ শোভা, সৌন্দর্য, আবার আরবি অর্থে সমুদ্র কিংবা প্রবাহ। ফার্সি অর্থে মশলা। আমরা শুরুর দুইটা অর্থ ধরে নিতে পারি অর্থাৎ বাহার অর্থ সৌন্দর্য কিংবা সমুদ্র৷ এরপর নামের দ্বিতীয় অংশ “ছড়া, চরা” নিয়ে দ্ব্যর্থতা দেখা দেয়। জনাব মুজিবুর রহমানের সূত্র ধর্তব্যে নিলে এই সংক্রান্ত একটি আর্টিকেল আমরা বাংলা পিডিয়াতে পাই
যেখানে, চর মানে, সাগর, মহাসাগর, হ্রদ অথবা নদী দ্বারা বেষ্টিত ভূখন্ড। সাধারণত নদীর গতিপ্রবাহে অথবা মোহনায় পলি সঞ্চয়নের ফলে গড়ে ওঠা ভূভাগকে চর বলে আখ্যায়িত করা হয়। বাঁকের চর (point-bars) বা পার্শ্বীয় চর এবং মধ্য চরা (medial or braid bars) সহ সকল ধরনের চর সাধারণভাবে চর নামেই অভিহিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশের নদনদীর ভাঙাগড়ার প্রক্রিয়ায় নদীর প্রবাহখাতে দ্বীপচর হিসেবে অথবা নদীতীরে সংযুক্ত ভূভাগ হিসেবে বালুচর গড়ে ওঠে। সীমিত ভূভাগের এ দেশে গড়ে ওঠা চরগুলি প্রায়ই নতুন বসতি স্থাপনের এবং নতুন কৃষিজমি তৈরির সুযোগে করে দেয়। দ্বীপচর এবং প্রধান ভূভাগের সঙ্গে সংযুক্ত চরের মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। দ্বীপচরগুলি বছরের সব সময়ই পানিবেষ্টিত থাকে, আর সংযুক্ত চরগুলি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকালীন সময়ে মূল ভূভাগের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। তবে উদ্ভিদ দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে পড়লে উভয় চরকেই সাধারণভাবে চর বলে আখ্যায়িত করা হয়। এ ব্যাপারে জনাব মুজিবুর রহমান জানান, ড. আবদুল করিম স্যার, প্রথম দিকে বাহারছড়া লিখতেন পরবর্তী লেখাগুলোতে বাহারচরা লিখেছেন “

আরও পড়ুন  নাপোড়া হিলফুল ফুজুল সুন্নীয়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদের কমিটি ঘোষণা

“বাহারচরা” শাব্দিক বিশ্লেষণের দিক দিয়ে সঠিক বলে সিদ্বান্ত দেন জনাব মুজিবুর রহমান, আবার সরকারি নথি ও স্থানীয়দের অধিকাংশ বাহারছড়া ব্যবহারে অভ্যস্ত। তবে মুজিবুর রহমানের সাথে একমত প্রকাশ করে বলতে চাই ব্যুৎপত্তিগত দিক দিয়ে বাহারচরা নামকরণ শুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি। কারন বাহারচরা নামে যে কটি ইউনিয়ন আমরা দেখতে পাই সবকটি সমুদ্র তীরবর্তী। এই নিয়ে আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে।

লেখক, রহিম সৈকত, সম্পাদক, বাঁশখালী এক্সপ্রেস।