Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

একজন আলমগীর মোহাম্মদ ; জনপদের আলোকোজ্জ্বল মুখ

বৈচিত্র্যময় পরিবেশে ঘেরা আমাদের বাঁশখালী। আনোয়ারা হয়ে ঢুকতেই রয়েছে “শঙ্খ নদী”। সামান্য আসলে পুকুরিয়া “চা বাগান”। আর একটু এসে পশ্চিম দিকে গেলে আঁকাবাঁকা “জলকদর খাল”। আরো পশ্চিমে রয়েছে “বঙ্গোপসাগর”। পূর্বে রয়েছে বিশাল বিশাল “পাহাড়”। মাঝখানে ” ইকোপার্ক” ও “কৃত্রিম বাঁধ”। রয়েছে “লবণের মাঠ” ও “শুটকির মাঠ”। “তারেক পার্ক” সহ রয়েছে দেশের মেগা প্রজেক্ট “এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট”।

কিন্তু আমি কথা বলব আমার উপজেলার একজন গুণীজন আলমগীর মোহাম্মদ সম্পর্কে। কারো জন্য গুণী না হলেও আমার জন্য গুণী। তিনি একাধারে শিক্ষক, লেখক, অনুবাদক ও কলাম লেখক। প্রতিনিয়ত তাঁর একটা না একটা কলাম জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। হরেকরকমের সপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বিভিন্ন স্থানে তাঁর লেখার দেখা মিলে। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে লেখেন তিনি। একজন বড়ো মাপের শিক্ষকের পাশাপাশি তিনি লেখার মাঝেই ডুবে থাকেন সম্ভবত।

কারণ, তাঁর অজস্র লেখা দেখেই বুঝা যায় তিনি লেখায় বেশ সময় দেন। আলমগীর মোহাম্মদ কখনো অনুবাদ, নিজের সৃষ্টি কর্ম, মনীষীর জীবনী ও সমসাময়িক বিষয়ের কলাম নিয়ে হাজির হন। অধিকাংশ সময় কাজী নজরুল, আল মাহমুদ, আহমদ ছফা, ইতিহাসবিদ ডঃ আ. করিম, প্রফেসর আসহাব উদ্দীন, বাঙালা মুসলমানদের ইতিহাস, চট্টগ্রামের সুপরিচিত স্থান ও পরদেশী লেখকের অনুবাদ সহ ইত্যাদি তথ্যবহুল চমকপ্রদ লেখা নিয়ে সাহিত্যের ক্ষুধা নিবারণ করেন আমাদের। তিনি ছোটোবেলা থেকেই যথেষ্ট মেধাবী ও প্রতিভাধর ছিলেন।

শিক্ষা জীবন: আলমগীর মোহাম্মদের জন্ম ৫’ই সেপ্টেম্বর ১৯৯২ সালে। যদিও গ্রামের সন্তান তবুও তাঁর লেখাপড়া চট্টগ্রাম শহর কেন্দ্রীয়। কোকদন্ডী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শেষ করে নগরের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মুহসিন কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। মুহসিন কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে ভর্তি যুদ্ধে নেমে পড়েন। নিজের মেধা ও কঠোর অধ্যবসায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের জায়গা তৈরি করে নেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

আরও পড়ুন  আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

কর্ম জীবন: আলমগীর মোহাম্মদ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন। তার মধ্যে শুরুতে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (কক্সবাজার) পরে বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি (চট্টগ্রাম), ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (চট্টগ্রাম) ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি (চট্টগ্রাম)-এ যোগদান করেন। সর্বশেষ বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (কুমিল্লা) ইংরেজি বিভাগে শিক্ষাদান করছেন। তাঁর পূর্বের প্রতিষ্ঠান সহ বর্তমান কর্মরত প্রতিষ্ঠানেও তাঁর খুব খ্যাতি ও সুনাম রয়েছে।

বৈবাহিক জীবন: প্রেম সবার জীবনে আসে! এমন একটা ছোট্ট লাইন হয়তো আমরা সবাই শুনে থাকি। আসলেই ঠিক প্রেম সবার জীবনে আসে৷ আর সাহিত্যের ছাত্র-ছাত্রী হলেতো কথায় নেই। যেহেতু সাহিত্য মানেই প্রেম। কথাটা এই জন্যই বললাম! এই বিশিষ্ট অনুবাদক ও লেখক প্রেমের সম্পর্ক করেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে পারিবারিক ভাবেই সব সম্পন্ন হয়েছিল। ২০১৮ সালে তিনি তাহমিনা তাহমী’র সাথে বিবাহ’র ফিরিতে বসেন। বর্তমানে তাদের সংসারে তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে “আকিলিস, আলিদজান ও আহীদজান”।

অনুবাদ ও কর্ম: আলমগীর মোহাম্মদের অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, শাশুড়ি ও অন্যান্য গল্প, রুমীর কবিতা, পরদেশী ১০০ কবিতা, লুইস গ্লুক, Selected Letters of Kazi Nazrul Islam, The Great Prophet Mohammed (S), Poems of Louise Gluck, Zia Haider Memorial Speech/My Theatre and Women, Iraner Itihase Nadir Shah, Kobita Khalil Jibran, Maolana Rumir Kotha, Bangali Musalmaner Itihas, Kichu Smriti-Kichu Kotha, এবং In the Streets of Greece, ইত্যাদি।

সবচেয়ে বড়ো গর্বের বিষয় হচ্ছে, আলমগীর মোহাম্মদ দেশের মাধ্যমিক জাতীয় পাঠ্যসূচি বইয়ের ইংরেজি অনুবাদক। “Art and Culture, Text Book for Class Seven, Eight and Nine. National Curriculum and Textbook Board Dhaka, Bangladesh. এই বইগুলোর ইংরেজি অনুবাদক তিনি ও মোহাম্মদ জসিমউদদীন। এছাড়াও তাঁর অগণিত সাহিত্য কর্ম রয়েছে। দেশের উঁচু স্তরের জাতীয় পত্রিকায় তাঁর লেখার ছড়াছড়ি। তিনি অনেক সময় বেতার কেন্দ্রে গদ্য পাঠ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

আরও পড়ুন  বাঁশখালী লইয়ার্স এন্ড ল'স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন'র আলোচনা সভা

আজ জনপদের এই গুণী সন্তানের জন্মদিন শেষ করছি জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে। সর্বশেষ তাঁর কয়েকটি ছোটো ছোটো বাক্য দিয়েই আমি শেষ করতে চাই। তিনি বলেন, “My dreams is to live in a discrimination free society. I had better die than cheat. Today is never too soon, tomorrow might be too late. I’m yet what am none cares or knows. My friends forsake me like a memory lost. I’m the consumer of my own sorrows.” (সর্ব প্রথম কাউকে নিয়ে লিখছি। ভুল হলে সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আমাকে। ধন্যবাদ।)

লেখক, শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ,
সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম।