অবৈধ বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার এলাকায় দুটি অপরাধী দলের মধ্যে সংঘর্ষে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় দুই জন নিহত এবং আরো দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
শনিবার দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে ৩টার দিকে নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা সড়কের চন্দনপুরা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন আবদুল্লাহ এবং মানিক। গুলিবিদ্ধ রবিন এবং অন্য একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর কাছাকাছি বালুর ব্যবসার কর্তৃত্ব নিয়ে দুটি অপরাধী দলের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। চট্টগ্রামের কুখ্যাত অপরাধী সারোয়ার বাবলার নেতৃত্বে একটি দল এবং খোরশেদ হাসানের নেতৃত্বে আরেকটি দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
ঘটনার সময় উপস্থিত একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কয়েকজন মিলে চন্দনপুরা মোড়ে চা খাওয়ার সময় হঠাৎ করেই তারা মোটরসাইকেলে আসা তিনজনকে একটি প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে দেখেন। ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশের টহল গাড়ি ছিল। গুলির আকস্মিকতায় তারা পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেন। পরে সেখানে তারা দুইজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এবং প্রাইভেটকারটির চালকের আসন রক্তে ভেসে যেতে দেখেন।
আহতদের মধ্যে দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের একজনের পায়ে এবং অন্যজনের হাতে গুলি লেগেছে। তবে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
নগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার আমিরুল ইসলাম ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বালুর ব্যবসা নিয়ে সারোয়ার বাবলা এবং খোরশেদ, রায়হান ও হাসানের দলের মধ্যে পুরনো শত্রুতা ছিল। ঘটনার দিন সারোয়ার বাবলা ও তার সঙ্গীরা একটি প্রাইভেটকারে ছিলেন। খোরশেদ ও তার সহযোগীরা কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনাস্থলের কাছে পুলিশের টহল গাড়ি দেখে বাবলা দলের একজন সাহায্য চাইতে গেলে মোটরসাইকেলে আসা হামলাকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন এবং দুইজন আহত হন। ইমন নামে একজনকে পুলিশ আটক করেছে, তবে সারোয়ার বাবলা পালিয়ে গেছেন।
পুলিশের ধারণা, খোরশেদ ও তার দল রাউজান-রাঙ্গুনিয়ার দিকে পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।
সারোয়ার হোসেন বাবলা, একসময় চট্টগ্রামের বিখ্যাত এইট মার্ডার মামলার আসামি শিবিরক্যাডার সাজ্জাদ আলী খানের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৮টি মামলা রয়েছে। কিছু সময় আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি আবারও অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন।