বিশেষ প্রতিনিধি ◾
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড় ধনতোলা গ্রামে কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার পর শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির বদলে ইট ও মাটির গুঁড়ো পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে এক জামাইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ১৫ জুন (রোববার) এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের আফতার আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের সঙ্গে বড় ধনতোলার সাহেব আলী ওরফে সব্দুল হকের ছেলে মোকছেদুল ইসলামের বিয়ে হয় প্রায় এক বছর আগে। কিছুদিন আগে আছমা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

১১ জুন (বুধবার) সকালে মোকছেদুল তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শাশুড়ির হাতে একটি মিষ্টির কার্টন তুলে দেন। কিন্তু কার্টনটি খুলে দেখা যায়, তাতে মিষ্টি নয় বরং রয়েছে মাটি ও ইটের গুঁড়ো। এমন ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়ে আছমার পরিবার।

আছমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের পর থেকেই স্বামী আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন, টাকার জন্য চাপ দিতেন। গর্ভধারণের পর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। তিনি বলতেন, ছেলে হলে ভালো হতো, মেয়ে হলে জীবনটা বৃথা যাবে। এখন মেয়ে হয়েছে বলেই এমন অপমানজনক আচরণ করেছেন।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোকছেদুল ইসলাম জানান, “আমি এক কেজি মিষ্টি আর মেয়ের জন্য কিছু কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাকে সমাজে হেয় করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এমন নাটক সাজানো হয়েছে।”

ঘটনা সম্পর্কে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, “আমি ঘটনাটি প্রত্যক্ষ না করলেও স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

স্থানীয়দের অনেকে বিষয়টিকে নারীর প্রতি অবমাননা ও পারিবারিক সহিংসতার জঘন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সচেতন মহলের মতে, এটি শুধু একটি পারিবারিক সহিংসতা নয়, বরং কন্যাসন্তান জন্ম নিয়ে সমাজে বিদ্যমান পশ্চাৎপদ মানসিকতার একটি উদ্বেগজনক বহিঃপ্রকাশ। ঘটনাটি নারী অধিকারের প্রশ্নে আবারও সচেতনতা ও আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

আরও পড়ুন  শীলকূপ ঐক্য সংসদের বৃক্ষরোপণ কর্মসুচী