• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
আইসিবিআই ব্যাংকের এসভিপি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হলেন বাঁশখালীর মান্নান আশরাফ ফকির হত্যা: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, স্ত্রী-ছেলে কারাগারে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেড় বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে : আমীর খসরু ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁশখালীর যুবকের মৃত্যু বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অনুপস্থিত শীর্ষ নেতারা এনসিপির দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন বাঁশখালীর মিশকাত বাঁশখালী নিয়ে লেয়াকত আলীর ধারাবাহিক লেখনী ভাইরাল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন কঃ – প্রেমের বাদশাহর রাজকীয় উপাখ্যান বাঁশখালীতে গণঅধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল

রহিম সৈকত / ১৬৮ শেয়ার
আপডেট: রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মাদার্শা গ্রামের সাদামাটা পরিবেশে বেড়ে ওঠা এক শিক্ষক আজ হয়ে উঠেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের এক গর্বিত মুখ। দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্জিত আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ সনদ প্রমাণ করেছে—বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ, চট্টগ্রামের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকবাল দেখাতে পেরেছেন যে দৃঢ় মনোবল ও কঠোর সাধনা থাকলে বিশ্বমঞ্চ জয় করা আর অসম্ভব থাকে না।

দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টরের হাত থেকে তিনি গ্রহণ করেন এই আন্তর্জাতিক সনদ। শিক্ষকতা জীবনে অনেক সনদ থাকলেও এটি তাঁর কাছে বিশেষ মূল্যবান—কারণ এটি কোনো সৌভাগ্যজনিত অর্জন নয়; বরং দীর্ঘ পরিশ্রম, অটল নিষ্ঠা এবং একাগ্রতার ফসল।

দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশসহ মোট ১০টি দেশের শিক্ষকদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে। প্রতিটি দেশ থেকে মাত্র ৬ জন শিক্ষক মনোনীত হওয়ার সুযোগ—এ প্রতিযোগিতায় জায়গা পাওয়া ছিল তাঁর প্রথম বড় সাফল্য।

জনাব ইকবালের ভাষায়—
“প্রায় ৪০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তৃত আবেদনপত্র ছিল এটি। কেবল ভালো শিক্ষক হলেই হবে না; দরকার ধৈর্য, নিখুঁত তথ্য উপস্থাপন এবং আত্মবিশ্বাস।” আবেদনটি চূড়ান্ত করতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মহোদয়ের সহযোগিতা পাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রায় এক মাস ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা Ms. Sumin Seo অনলাইন সাক্ষাৎকার, ডকুমেন্ট যাচাই এবং বিভিন্ন মূল্যায়ন শেষে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচন করেন। বাংলাদেশ থেকে পাঁচজন শিক্ষক এবং একজন কর্মকর্তা চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন। এরপর শুরু হয় সপ্তাহব্যাপী অনলাইন ক্লাস, ওয়ার্কশপ ও নিয়মিত মিটিং। এমনকি শুক্রবার জুমার নামাজের সময়েও ক্লাসে যুক্ত থাকতে হয়েছে। পরে দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান— Seoul National University
এবং Seoul Education Training Institute

—এ অনুষ্ঠিত টানা প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর সনদ গ্রহণের মুহূর্তটি তাঁর জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে এসে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারা সম্পর্কে ইকবাল বলেন— “আমার অর্জনের পেছনে কোনো সুপারিশ ছিল না। আমি বিশ্বাস করি—সুযোগ কাউকে দিয়ে দেওয়া হয় না; কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর সৎ ইচ্ছাই সুযোগ তৈরি করে দেয়।”

দেশের অন্যান্য শিক্ষকদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ—
আন্তর্জাতিক সুযোগের খোঁজে নিয়মিত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, বিভিন্ন দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসরণ করুন।
শিক্ষক বাতায়ন (Shikkhok Batayon) সহ বিভিন্ন শিক্ষাবিষয়ক প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকুন।
নতুন জিনিস শেখার আগ্রহ বজায় রাখুন এবং নিজের দক্ষতা নিয়মিত উন্নত করুন।

মোহাম্মদ ইকবাল এর এই সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়—এটি বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের বৈশ্বিক অগ্রযাত্রার এক অনুপ্রেরণাদায়ক দৃষ্টান্ত। তাঁর বার্তা খুবই স্পষ্ট—
“আপনিও সক্ষম—যদি চেষ্টা করেন, প্রস্তুতি নেন এবং নিজের যোগ্যতাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করেন। আসুন, সবাই মিলে বাংলাদেশের শিক্ষাকে বিশ্বমানের শিখরে পৌঁছে দিই।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ
সিবি হসপিটাল কী? কেন? কিভাবে?