• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
শিরোনামঃ
আইসিবিআই ব্যাংকের এসভিপি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হলেন বাঁশখালীর মান্নান আশরাফ ফকির হত্যা: অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা, স্ত্রী-ছেলে কারাগারে হাটহাজারীর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিশ্ব মঞ্চে মোহাম্মদ ইকবাল বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেড় বছরে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে : আমীর খসরু ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় বাঁশখালীর যুবকের মৃত্যু বিএনপির প্রার্থী তালিকায় অনুপস্থিত শীর্ষ নেতারা এনসিপির দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী হলেন বাঁশখালীর মিশকাত বাঁশখালী নিয়ে লেয়াকত আলীর ধারাবাহিক লেখনী ভাইরাল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন কঃ – প্রেমের বাদশাহর রাজকীয় উপাখ্যান বাঁশখালীতে গণঅধিকারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

আলোর পাঠশালা বিদ্যাবাড়ি দুই পেরিয়ে তিনে

রিপোর্টার নাম: / ২৮ শেয়ার
আপডেট: সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

বাঁশখালী এক্সপ্রেসের মুখপত্র, ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী সংখ্যা শিকড় এ বিদ্যাবাড়ি নিয়ে প্রকাশিত ফিচারের অংশবিশেষ ;

জলকদরের কোল ঘেঁষে ছবির মত গ্রাম, জলককদরের শাখা সোনাইছড়ি গ্রামের গায়ে এঁকে দিয়েছে আর কমনীয়তা, লাবণ্য। জনপদের নামের সাথে অনেকটা মিল সেই গ্রামের নাম বাঁশখালা। যোগাযোগ ব্যবস্থায় তুলনামূলক পিছিয়ে থাকলে আলোর পথে যাত্রী হওয়ার দৌড়ে খুব পিছিয়ে নেই। পায়ে হেঁটে বিদ্যা অর্জন করে গ্রামের পাঠ চুকিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উচ্চশিক্ষার পথে। উচ্চশিক্ষা সমাপন করে তাদের কেউ কেউ গ্রামকে আলোকিত করার ব্রত নিয়ে শিকড়ের সাথে সংযুক্ত থাকছে। তাদের একজন বাংলাদেশ পুলিশের চৌকস কর্মকর্তা, স্মার্ট বাংলাদেশ এওয়ার্ড জয়ী জনপদের শিকড় সন্ধানী সন্তান, কক্সবাজার জেলার পুলিশের অতিরক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী পিপিএম। এলাকার শিক্ষিত তরুণদের একত্রিত করে, সচেতন নাগরিকদের সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করলেন আলোর পাঠশালা বিদ্যাবাড়ি। বিদ্যাবাড়ি সূত্রে জানা যায় ৫ মে, ২০২২ তারিখে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এক হাজার বই দিয়েই আলোর পাঠশালাটির যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। উপকূলীয় বাঁশখালা গ্রামে ছয় পিলারের উপর বিদ্যাবাড়ির ভিত্তি। রঙে রাঙানো বাড়িটি দূর থেকেই চোখে পড়বে। বড় লাল হরফে সামনের দিকেই লেখা আছে ‘বিদ্যাবাড়ি’। সবুজ রঙে ছোট হরফে লিখা আলোর পাঠশালা। একত্রিত লাল-সবুজ। শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে দেয়ালের দুই পাশে লিখা আছে, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর ফরজ।’ যারা জানে, আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? আলমিরায় থরে থরে রাখা হয়েছে বই। দেয়ালে সাঁটানো বই রাখার সেলফগুলোও চমৎকার। ইংরেজি হরফে আরইএডি (রিড) বানিয়ে সেলফ সাজানো হয়েছে। এই পাঠশালায় থাকা বই পড়ে শুধু বাঁশখালা নয়, বাঁশখালীর শিক্ষার্থীরাও জ্ঞানার্জন করতে পারবে। আলোর পাঠশালার আলো সারা বাঁশখালীতে ছড়িয়ে দিতে চান বিদ্যাবাড়ির উদ্যোক্তারা। বিদ্যাবাড়ির প্রধান উদ্যোক্তা মো. জসীম উদ্দিন বলেন, আমি ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে চলে আসি। তার আগে পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করতাম। সেই এলাকায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। আমরা পাঠ্যপুস্তকের বাইরে গিয়ে অন্যকোন বই পড়তে পারিনি। আউট বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকায় অনেক কিছুই জানতে পারিনি। পরে যখন চট্টগ্রাম কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছি তখন বুঝেছি গ্রামের শিক্ষার্থীরা অনেককিছু থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে বই পড়তে না পারাটা এর মধ্যে অন্যতম। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই বিদ্যাবাড়ি তৈরিতে উৎসাহ কাজ করছিল। এই বিদ্যাবাড়ি হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের সম্পদ। বাঁশখালীতে শত শত শিক্ষার্থী দেশের খ্যাতনামা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া করে। করেনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকেই বাড়িতে ছিল। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে বেশিরভাগ সময় পার করেছে মুঠোফোন, আড্ডা ও ঘুরাফেরায়। বাড়তি জ্ঞানার্জনের বই না থাকায় অনেকেই আগ্রহ থাকার পরেও বই পড়া থেকে বিরত ছিলু। এতে লেখাপড়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। হয়তো অনেকেই ভালো ফলাফল করেছে। কিন্তু জ্ঞানমুখী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এসব কারণেই এই বিদ্যাবাড়ি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বিদ্যাবাড়িতে স্বশরীরে গিয়ে যে কেউ বই পড়তে পারবে। অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রমের কথাও ভাবছেন বিদ্যাবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা মো. জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম শুরু করবে বিদ্যাবাড়ি। বাঁশখালীর যেকোন প্রান্ত থেকে বই চাইলেই বই দেয়া হবে। এমনকি বিদ্যাবাড়িতে কাঙ্ক্ষিত বই না থাকলেও সংগ্রহ করেই সেই বই পৌঁছে দেয়া হবে। তবে দুই থেকে তিনদিনের বইটি পড়ে ফেরত দিতে হবে। এজন্য আমরা মেম্বারশিপ কার্ড দেয়ার চিন্তা করছি। বাৎসরিক নামেমাত্র ১২০ টাকা ফি নির্ধারণ করে বইপড়া কর্মসূচি চালু করা হবে। আমরা চাই আলোর পাঠশালাটির আলো বাঁশখালী উপজেলার সকল প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ুক।

নতুন বছরের দিনপঞ্জিকা হাতে অতিথিবৃন্দ

প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে ব্যতিক্রমী কর্মসূচীর মাধ্যমে এই পাঠাগার ব্যাপক সচেতনতা তৈরি কিরতে সমর্থ হয়েছে। পাঠাগারের উদ্যোগে বাংলা বানান চর্চা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি, বই পড়ার আগ্রহ তৈরীর করা যায় এমন কর্মসূচি নিয়মিত হয়ে আসছে। এই পাঠাগারের অধীনে প্রায় ৬০ হাজার বৃক্ষ বিতরণ করা হয়েছে সমগ্র বাঁশখালী জুড়ে। রবিবার ৫ মে, ২০২৪ তারিখে বিদ্যাবাড়ি দুই পেরিয়ে তিনে পা রাখল। দিনটিকে ঘিরে আয়োজন করা হয় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি ও আলোচনা সভা। এতে মেডিকেল সহয়তা প্রদান করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একুশে ফাউন্ডেশন। বিদ্যাবাড়ি’র সাধারণ সম্পাদক জনাব নুরুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, প্রভাষক নেজাম উদ্দিন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, গ্রন্থাগার সম্পাদক মো আনছার, মিরাজুল ইসলাম, একুশে ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা শামিম উল্লাহ আদিল, টেরিবাজার ব্লাড ব্যাংকের এডমিন আতিকুল ইসলাম, রায়হানুল ইসলাম সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটেগরিতে আরো নিউজ
সিবি হসপিটাল কী? কেন? কিভাবে?