রহিম সৈকত ▪️
বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে খোরশেদ আলম ও ইমরানুল হক ইমরানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নবীন প্রবীণের এই লড়াইয়ের একমাত্র ডার্ক হর্স প্রবীণ শেখ ফখরুদ্দিন চৌধুরী। চায়ের আড্ডায়, মাঠে ঘাটে এখন আলোচনার তুঙ্গে কে হতে যাচ্ছে আগামী ৫ বছরের উপজেলার কান্ডারি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে চলছে কথার যুদ্ধ। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলছে না। যদিও বাঁশখালী এক্সপ্রেস কর্তৃক পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে নিরঙ্কুশভাবে এগিয়ে আছে খোরশেদ আলম। এই জরিপে অংশ নেয় ২৪১৭ জন নেটিজেন। যেখানে ৪৭ শতাংশ নেটিজেন খোরশেদ আলম এর পক্ষে মত দেন যেখানে ১১৫০ জন নেটিজেন মনে করেন জিতবে খোরশেদ আলম। অপর দিকে ২৩ শতাংশ নেটিজেন মত ছিল মোজাম্মেল হক সিকদার, সে জিততে পারে এমন অনুমানকারীর সংখ্যা ছিল ৫৫৭ জন যদিও মোজাম্মেল হক সিকদার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ২১ শতাংশের রায় বগলদাবা করেছেন ইমরান। ইমরানের পক্ষে অনুমান করেছেন ৫১৭ জন। মাত্র ২ শতাংশ সমর্থন পাওয়া শেখ ফখরুদ্দিন এর পক্ষে মত দিয়েছে ৬৪ জন। মাত্র একদিন আগে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা জাহিদুল হক চৌধুরী মার্শাল ৫ শতাংশ সমর্থন নিয়ে পেয়েছেন ১২৯ জনের মত। উল্লেখ্য অনলাইন জরিপে অংশ নেয়া বেশিরভাগের বয়স ১৬-৪৫ বছরের মধ্যে। ভোটার হননি কিংবা বাঁশখালীর অধিবাসী নয় এমন লোকও এই জনমতে শামিল হয়েছেন।
এত গেল অনলাইন জরিপ, মাঠের জরিপ কী বলছে? বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলেছি। তাতে উঠে এল ইমরান খোরশেদ এর দ্বৈরথ। একজন উত্তরের প্রার্থী অন্যজন দক্ষিণের প্রার্থী। স্থানীয় নির্বাচনে এলাকা প্রীতি চরমভাবে কাজ করে। এইবারও যদি এটা কাজ করে তবে লড়াইটা ভালই হবে বলা বাহুল্য।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা মিলে রাজনৈতিক লড়াইটা বিশ্লেষণ করতে গেলে। এখানে ইমরান বলতে গেলে এক ঘরে হয়ে পড়েছে। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সাংগঠনিক নেতাকর্মী খোরশেদ শিবিরে তাবু টেনেছে। শৈবাল দাশ সুমনের মত ব্যক্তিও খোরশেদ এর হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গরম করে রাখছে। খোরশেদ আলমের অনুসারী, সমর্থক এর দাবী এমপি মুজিবুর রহমান সিআইপির সমর্থনও তাঁদের সাথে আছে। জয়টা তারাই পাচ্ছে। অপরদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রিয়াজুদ্দিন চৌধুরী সুমন ও তাঁর অনুসারীরাই ইমরানের শক্তি সাহস অটুট রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দলীয় সমীকরণ বাদ দিলে বড় অংশজুড়ে থাকবে সাধারণ ভোটার। বিএনপি, জামায়াত কোন প্রার্থী না দেয়ায় এই ভোট সম্পর্কে কোন আগ্রহ নেই তাঁদের মাঝে। এরপর আসে ভাসমান ভোটার। যারা কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক কিন্তু দৃশ্যমান রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত নয়। ইমরান সমর্থকদের দাবী সেই ভাসমান ভোটারের বেশিরভাগ তাঁরাই পাবেন।
এই নিয়ে খোরশেদ আলম বাঁশখালী এক্সপ্রেসকে বলেন,’আমি দীর্ঘ দিন রাজনীতি করে আসলেও আমি কাউকে কখনো হয়রানি করিনি। আদর্শিক রাজনীতির সাথে ছিলাম, আছি, থাকব। যেহেতু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন দলীয় প্রতীক নেই সেহেতু রাজনৈতিক প্রসঙ্গ এখানে অর্থহীন। বাঁশখালীর মানুষ আমার ত্যাগ, নিবেদনকে মূল্যায়ন করবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
অন্যদিকে ইমরান এর কন্ঠে ফুটে উঠল প্রবল আত্মবিশ্বাস। গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েও একদিনের জন্য চেয়ারে বসতে না পারা বিষয়টিকে তাঁর উপর অবিচার হিসেবে উল্লেখ করে বাঁশখালী এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘ মানুষ প্রার্থীর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দূরদর্শিতা বিবেচনা করে সিদ্বান্ত নিবেন। অতীতে যার ট্র্যাক রেকর্ড ভাল তিনিই ভোটারের বিবেচনায় থাকবেন। সেই হিসেবে বলতে পারি ভোটার আমাকেই বিবেচনা করবেন।
কথার যুদ্ধে নিজে নিজে জয়ী হওয়ার কথা জোরেশোরে শোনা গেলেও সঠিক জবাব জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৫জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত। বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩জন। তাঁরা হলেন আক্তার হোসেন, আরিফুজ্জামান আরিফ, এম এ মালেক মানিক, আরিফুর রহমান সুজন ,ইমরুল হক চৌধুরী ফাহিম,ওসমান গণী, মোহাম্মদ, হোছাইন,রেহেনা আকতার কাজমী,
ইয়ামুন নাহার, নুরী মন আক্তার নুরী।