প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ও সনদ যাচাই ছাড়াই নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগে প্রবেশনারি সময়কালে থাকা চট্টগ্রামের ৫৮৯ জনকে চাকরিচ্যুত করল বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)। এদের মধ্যে বেশিরভাগ পটিয়া ও বাঁশখালীর বলে জানা যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রত্যেককে আলাদাভাবে চিঠি দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানানো হয়েছে। চট্টগ্রামের পটিয়ার এসব বাসিন্দা চলতি বছর নিয়োগ পেয়েছিলেন এস আলম গ্রুপের ‘বিশেষ কোটায়’।
ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, এসআইবিএলের মোট জনবল ৪ হাজার ৭৫০ জন। এর মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয় ২ হাজার জনকে। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি দখলে নেওয়ার পর এসব নিয়োগ হয়। যাদের বেশিরভাগ চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা।
অভিযোগ আছে, এস আলমের বাড়ির সামনে রাখা চাকরির বক্সে সিভি জমা দিয়ে তারা চাকরি পেয়েছেন। এভাবে নিয়োগ পাওয়া অন্যদের বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানায় সূত্রটি।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির এক কর্মকর্তা নাম অপ্রকাশে বলেন, ন্যূনতম যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই অপ্রয়োজনীয় অনেক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, অনেক শাখায় বসার জায়গা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
সদ্য চাকরিচ্যুত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত তিন মাস অস্থির সময়ে ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা বলতে গেলে ব্যাংকে উপস্থিত ছিলেন না। যাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাঁরাই সামাল দিয়েছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ১০ নং শর্তের দোহাই দিয়ে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা চরম অমানবিক । কারো কারো বেসরকারি খাতে ভাল পজিশনে চাকরি ছিল, ব্যবসা ছিল সেসব ছেড়ে তাঁরা এই চাকরিতে যায়। কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়া এইভাবে চাকরিচ্যুত করার নজির আর আছে কিনা জানা নেই। অনেকে পরিবার নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গেছেন, অনেকে বিয়ের জন্য সকল প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন তাঁদের কোথায় নামিয়ে দেয়া হল?
তিনি আরও বলেন, নানাভাবে তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ১০ নম্বর শর্তের আলোকে তাদের ছাঁটাই করা হলো। এর মাধ্যমে ব্যাংকের ব্যয় সংকোচন হবে।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গত ২৫ আগস্ট এস আলম গ্রুপের দখলমুক্ত করতে এসআইবিএল ব্যাংকের আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল ও নতুন পর্ষদ গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে।