প্রতীকী ছবি | কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরী

অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম▪️

বেশ কয়েকমাস যাবৎ অনেকেই কোর্ট ম্যারেজ নিয়ে ফোন কলে এবং মেসেজে জানতে চেয়েছেন। অনেকদিন ধরে ভাবছি কোর্ট ম্যারেজ নিয়ে একটা কিছু লিখবো। কিন্তু সময় সুযোগ হয় না। ভাবলাম আজ লিখি।

কোর্ট ম্যারেজ কী,কীভাবে হয়,বৈধতা কী এবং সঠিক বিবাহ পদ্ধতি কোনটি?
কোর্ট ম্যারেজ বলতে সাধারণ মানুষ যেটা বুঝে থাকে সেটা হলো কোর্টে এসে বিয়ে করা। তবে কোর্ট ম্যারেজ বলতে যে বিয়ে সমাজে প্রচলিত, সেটা ধর্মীয় মতে বৈধ নয় এবং এর আইনগত ভিত্তিও নেই। কোর্ট ম্যারেজ বলতে সমাজে যেটা প্রচলিত সেটা হলো হলফনামার মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিয়ের ঘোষণা দেয়াকেই বোঝানো হয়ে থাকে। এই হলফনামাটি ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে লিখে নোটারি পাবলিকের সামনে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

কোর্ট এরিয়াতে কয় ধরনের বিয়ে হয়?
উত্তর হল দুই ধরনের
১) কাজীর মাধ্যমে বিবাহ।
২) হলফনামার মাধ্যমে বিবাহ (উপরে যেটা আলোচনা করা হলো)

(১) কাজীর মাধ্যমে যে বিবাহটা সম্পন্ন হয় সেটা হচ্ছে বৈধ বিবাহ এবং সেটার আইনগত ভিত্তি রয়েছে এবং যেখানে রেজিস্ট্রার্ড নিকাহনামা সম্পাদন করা হয়।

(২) হলফনামার মাধ্যমে যে বিবাহ হয় সেটা একটি বিবাহের ঘোষণা মাত্র। ঘোষণা কখনো বিয়ে হতে পারে না। এই হলফনামার আইনগত কোন ভিত্তি নেই।
অতএব কাজীর মাধ্যমে বিবাহ করবেন আইনগত জটিলতা থেকে বাঁচবেন।

কেস স্টাডি : বেশ কিছুদিন আগে একটা নাম্বার থেকে একটা ছেলে ফোন দিয়ে বলে তার প্রেমিকার বয়স ১৭ বছর তার বয়স ২১ বছর, সে কোর্ট ম্যারেজ করতে চাই। করতে পারবে কিনা?
আমার উত্তর- পারবে না, সম্ভব নয়।

অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কোনভাবেই নিকাহনামা মূলে বিবাহ সম্পন্ন করার সুযোগ নেই এবং নিবন্ধনেরও সুযোগ নেই। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলের বয়স ২১,মেয়ের বয়স ১৮ হতে হবে। অন্যথার সেটা বিবাহ হবে না, কেউ করে দিবে বললে আপনি প্রতারণার স্বীকার হবেন।

আরও পড়ুন  বাংলাদেশে করোনার ভারতীয় ধরনের (ভ্যারিয়্যান্ট) সন্ধান

আমার একটা মামলার বিষয়বস্তু দিয়ে আলোচনা শেষ করছি…

মেয়ের বয়স ১৬ বছর ৮ মাস,ছেলের বয়স ২২ বছর। তাদের মধ্যে ২ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। ছেলেটি মেয়েটাকে নিয়ে পালিয়ে যায় অতঃপর কথিত হলফনামা মূলে বিবাহ করে। এদিকে মেয়ের বাবা থানায় গিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯(১) ধারায় (অপহরণ/ধ*র্ষণ) মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করলো৷ বিজ্ঞ আদালতের আদেশ মূলে মেয়ে গেল বাবার জিম্মায় আর ছেলে গেল জেলখানায়। সুতরাং এধরণের ভুল করা থেকে বিরত থাকুন।

অতএব সচেতন হোন, নিজে অপরাধ করা থেকে বিরত থাকুন অন্যকেও বিরত রাখুন।

লেখক, আইনজীবি চট্টগ্রাম জজকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *