দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এর তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে সাজ সাজ রব উঠেছে। যদিও বিরোদী দলীয় রাজনৈতিক দল গুলো তফশিল প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবী দাওয়া নিয়ে মাঠে ময়দানে। আন্দোলনে তাঁরা সফল হবেন নাকি ব্যর্থ হবেন সেটা সময় বলে দিবে। আমাদের আজকের আয়োজন সংসদীয় আসন ২৯৩ চট্টগ্রাম বাঁশখালী (১৬) আসনে সরকার দলীয় মনোনয়ন যুদ্ধে কারা কারা অবতীর্ণ হচ্ছেন এবং তাঁদের নিয়ে মাঠে ময়দানে নেতাকর্মীরা কী ভাবছেন তা নিয়ে। দলীয় বেশ কিছু নেতা কর্মীর সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাঁদের কাছে শুধু জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোন ইতিবাচক ভূমিকার কারনে, অবস্থানের কারনে নৌকা প্রতীক পেতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মাঠ থেকে যেসকল তথ্য আমরা পেয়েছি তা হুবুহু কৌতুহলী জনসাধারণের পাতে তুলে দেয়া হল। আমাদের সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এর দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহকারী ১৩ জন প্রার্থী নিয়ে এই প্রতিবেদন । (উল্লেখ্য এই প্রতিবেদন জ্যেষ্ঠতা কিংবা পদ পদবীর উপর ভিত্তি করে সাজানো হয়নি)
১৩. লায়ন শেখর দত্ত :
দলীয় নেতাকর্মীদের মত আওয়ামী রাজনীতিতে লায়ন শেখর দত্ত তেমন পরিচিত মুখ নন। উপজেলা দূর্নীতি দমন কমিশন এর দায়িত্বশীল হিসেবে তিনি কিছু কাজ করেছেন।
আগামীদিনে নিজকে আওয়ামী পরিবারের নিবেদিত প্রাণ সদস্য হিসেবে প্রমাণ করতে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে হবে। এই বারে হয়ত আগমনী বার্তা দিয়ে রেখেছেন কিন্তু মনোনয়ন এর দৌঁড়ে পিছিয়ে থাকবেন।
১২. আ.ন.ম সারোয়ার আলম,
একজন শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংগঠক হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুপরিচিত ব্যক্তি। আছে বর্ণিল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামিলীগ এর সদস্য হিসেবে আছেন। কিন্তু একটি সংসদীয় আসনের দায়িত্বভার নেয়ার মত যে পথ হাটা দরকার ততটা পথ তাঁর হাটা হয়নি। নিজকে তৈরী করতে পারলে আগামীতে তিনি যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে উঠে আসতে পারবেন।
১১. অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক :
পুকুরিয়ার এই সন্তান একজন দক্ষ আইনজ্ঞ। চট্টাগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সদস্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, সাবেক বোর্ড সদস্য, চট্টগ্রাম ওয়াসা, সহ সভাপতি, পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদ, চট্টগ্রাম ইত্যাদি পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থাৎ জন সম্পৃক্ত একজন ব্যক্তি। রাজনীতির কথা আসলে তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামিলীগ এর সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বর্তমানে দক্ষিণ জেলা আওয়ামিলীগ এর সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দল যদি একজন দক্ষ আইনজ্ঞ ব্যক্তির মূল্যায়ন করে তিনি বিবেচিত হতেও পারেন।
১০. প্রফেসর ডা. আলমগীর চৌধুরী :
বাঁশখালীর তৃনমূল রাজনীতিতে ততটা পরিচিত মুখ না হলেও জাতীয়ভাবে তিনি একটি অবস্থান ধারণ করেন। চিকিৎসা জগতে তিনি স্বনামধন্য একটি নাম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন জীবনের বাকি সময় বাঁশখালীর জনগণের সেবা করতে চান। একজন পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি হিসেবে সুন্দর একটা ভাবমূর্তি তাঁর রয়েছে। ইতমধ্যে বাঁশখালীতে নিয়মিত বিনামূল্যে, নামে মাত্র ফিতে রোগী দেখা শুরু করেছেন। দলীয় রাজনীতিতে আওয়ামী তাঁতীলীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। দল তাঁর অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন করলে হয়ত চমক হয়েই আসবেন।
৯.
অ্যাডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন :
চট্টগ্রাম জেলা বারে একজন জাদরেল আইনজীবী হিসেবে নিজের অবস্থান অনেকবার জানান দিয়েছেন। মূলত জনাব জিয়া উদ্দিনকে বর্তমান প্রজন্ম আইনজীবী হিসেবে চিনলেও দলীয় রাজনীতিতে তাঁর পারিবারিক অবদান অনস্বীকার্য। বাঁশখালী আওয়ামিলীগ এর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এডভোকেট আবদুস সবুর সাহেবের সন্তান তিনি। চট্টগ্রাম মহানগরীর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক জনাব জিয়া উদ্দিন জেলা বারে ৩ বারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করেন। বাঁশখালীতে দলীয় রাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ের পদচারণা তিনি তাঁর আগমনী বার্তা দিয়ে রেখেছেন। পশ্চিম বাঁশখালীর মানুষের অধিকার আদায়ের কথা বলে তিনি আলাদা করে নজর কাড়ছেন। দল মূল্যায়ন করলে নিঃসন্দেহে চমক হয়ে আসবেন তিনি।
৮. সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি :
সাইফুদ্দীন আহমেদ রবি কে নিয়ে কথা উঠতেই দলীয় নেতা কর্মীরা অনেকটা স্মৃতি কাতরতায় ভুগেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সদর্পে বিচরণ। দক্ষিণ জেলা আওয়ামিলীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের দুর্দিনে একজন নিবেদিত প্রান সদস্যের ভূমিকা পালন করেছেন। আওয়ামী রাজনীতির ধারক বাহক বলতে যা বোঝানো হয় একজন সাইফুদ্দিন রবি তাই। দলের প্রশ্নে ত্যাগী, আপোষহীন একজন নেতা। এক বিন্দু পরিমান খাঁদ নেই তেমন একজন কর্মী। আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়ে বুক চেতিয়ে নেত্রীর জন্য যুদ্ধ করা রাজ পথের লড়াকু একজন সৈনিক। নেত্রী বিরোধী দলীয় অবস্থানে থাকার সময় বডি গার্ডের ভূমিকা পালন করেছিলেন। আমাদের ব্যর্থতা তেমন একজন সংগঠককে মূল্যায়ন করতে না পারা। দল যদি তাঁর অতীত ভূমিকাকে মূল্যায়ন করে তবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
৭. মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান :
মু. মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এর একজন পরীক্ষিত মানুষ। এমন দিন গেছে মুজিবুর রহমানের এনায়েত বাজার জুবলি রোডের অফিস থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার কর্মসূচি চলত। কালের বিবর্তনে মূল স্রোত থেকে মুজিবুর রহমান বিচ্যুত হয়ে যাওয়াই দল একজন দক্ষ সংগঠক এর নিবেদন থেকে বঞ্চিত হয়। তবে আশার কথা মুহাম্মদ মুজিবুর রহমানরা আবার নতুন করে সংগঠনকে সময় দেয়ার চেষ্টা করছেন। তাছাড়া বাঁশখালী তথা পশ্চিম বাঁশখালীতে শিক্ষা বিস্তারে মুজিবুর রহমানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এসব ভূমিকা দল বিবেচনা করলে মুজিবুর রহমান ফেলনা নয়।
(২য় কিস্তি আসছে)