তৈলারদ্বিপ সেতুর টোল প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

Byবাঁশখালী এক্সপ্রেস

মে ৫, ২০২৪ #Banshkhali Express, #Banshkhali Express Live, #Banshkhali Express TV, #Banshkhali Mirror, #Banshkhali News, #Banshkhali Online Portal, #Banshkhali Plus, #Banshkhali Post, #Banshkhali Television Banshkhali News, #Banshkhali Times, #Banshkhali Today, #Banshkhali TV, #Bashkhali Maheshkhali, #Chattogram., #Chittagong, #Chittagong South, #History of Banshkhali, #Priyo Banshkhali, #আজকের বাঁশখালী, #চট্টগ্রাম। Banshkhali, #তৈলারদ্বিপ সেতু, #দক্ষিণ চট্টগ্রাম, #প্রিয় বাঁশখালী, #বাঁশখালী, #বাঁশখালী অনলাইন পোর্টাল, #বাঁশখালী উপজেলা, #বাঁশখালী এক্সপ্রেস, #বাঁশখালী এক্সপ্রেস টিভি, #বাঁশখালী এক্সপ্রেস লাইভ, #বাঁশখালী টাইমস, #বাঁশখালী টিভি, #বাঁশখালী টুডে, #বাঁশখালী নিউজ, #বাঁশখালী পোস্ট, #বাঁশখালী প্লাস, #বাঁশখালী মহেশখালী, #বাঁশখালী মিরর, #বাঁশখালী সংবাদ, #বাঁশখালী সমাচার, #বাঁশখালীর ইতিহাস, #বাঁশখালীর খবর, #সমগ্র বাঁশখালী, #সারা বাঁশখালী

তৈলারদ্বীপ সেতুর অন্যায্য টোল প্রত্যাহারে দাবীতে বাঁশখালী স্টুডেন্টন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য :

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণে অবস্থিত শিল্প, আবাদি জমি ও প্রকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি অনিন্দ্য সুন্দর উপজেলা বাঁশখালী। আমাদের এই উপজেলার পূর্বে রয়েছে পাহাড় আর পশ্চিমে রয়েছে সুবিশাল সমুদ্র সৈকত। বাঁশখালীর মাঝ বরাবর বয়ে চলা একমাত্র প্রধান সড়ক পিএবি সড়ক নামে পরিচিত। যা কর্ণফুলী টানেল হয়ে পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী হয়ে পেকুয়া কক্সবাজারের সাথে মিলিত হয়েছে। কণফুলী টানেল হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য এ রাস্তা ব্যবহারে দুরত্ব এবং সময় অনেকটা কমিয়ে দেয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এ সড়কের প্রবেশ পথে সাঙ্গু নদীর উপর নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতুতে অনিয়ন্ত্রিত টোল আদায় বাঁশখালী তথা এ সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য দূর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ : বাঁশখালী সাঙ্গু নদীর উপর সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে তৈলারদ্বীপ সেতু। ২০০১ সালের ১৭ই জানুয়ারী এই সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। প্রায় ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। এবং ২০০৭সাল থেকে দীর্ঘ ১৭বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে। ৩ বছরের ইজারা দিয়েই যেখানে নির্মাণ ব্যয় উঠে যায়, সেখানে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে টোল আদায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনগণের অধিকারের পরিপন্থি।

আইনি বিধান: বাংলাদেশ গ্যাজেট ২৬ জুন’২০১৪ এর সংশোধিত প্রজ্ঞাপন, টোল নীতিমালা অনুযায়ী, ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও অনুন্নত আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনার প্রেক্ষিতে টোল মওকুফের বিধান থাকলেও এই সেতুর ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। একটি সেতুতে টোল আদায় করা হয়, সেতুর নির্মাণ ব্যয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। সেই বিবেচনায় দেখা যায়, তৈলারদ্বীপ সেতুর নির্মাণ ব্যয় ৩২ কোটি টাকা।

কিন্তু প্রতি ৩ বছরে এ সেতু থেকে টোল আদায় হয় ৩০-৩৫ কোটি টাকা। অথচ সেতু নির্মাণের পর থেকে কোনো ধরনের দৃশ্যমান মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ চোখে পড়েনি।

আরও পড়ুন  সবুজের আঁচড়ে জনপদকে জাগিয়ে তোলা এক শিল্পি

বৈষম্য: সাঙ্গু নদীর উপর আরো ৬টি সেতু রয়েছে যা তৈলারদ্বীপ অপেক্ষা অনেক বড়। কিন্তু বাকি ৫টি সেতু টোলমুক্ত হলেও একমাত্র তৈলারদ্বীপ সেতুতে টোল দিতে হয় যা বাঁশখালীর মানুষের সাথে চরম বৈষম্যমূলক আচরণ।

অন্যায্য টোল আদায়: চট্টগ্রাম নগরীর প্রবেশপথে অবস্থিত শাহ আমানত সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার। পক্ষান্তরে তৈলারদ্বীপ সেতুর দৈর্ঘ্য ৫১২ মিটার। অথচ তৈলার দ্বীপ সেতুতে শাহ আমানত সেতুর সমপরিমাণ কিংবা তার চেয়েও বেশি টোল দিতে হয়। একটি ট্রাক পারাপারে যেখানে প্রায় দ্বিগুণ দৈর্ঘ্যের শাহ আমানত সেতুতে টোল দিতে হয় ১৮০ টাকা সেখানে একই ট্রাককে তৈলারদ্বীপ সেতুতে টোল দিতে হয় ৩০০ টাকা, যা অন্যায্য ও অযৌক্তিকও বটে। তাছাড়া রাতে চলাচল করা দূরপাল্লার যানবাহনকে টোকেন বিহীন অতিরিক্ত টোল হাতিয়ে নেওয়া হয় যা রীতিমতো চাঁদাবাজির সামিল। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় অসংখ্য নিউজ এসেছে।

অর্থনৈতিক চাপ ও দ্বৈত কর: তৈলারদ্বীপ সেতু সহ কর্ণফুলি সেতু উভয়ই চট্টগ্রাম শহর হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। একই হারে দুটি সেতুতে টোলের কারণে যাতায়াত ব্যয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে, বিনিয়োেগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং জীবন যাত্রার মান হ্রাস পেয়েছে। এই টোল বাঁশখালী বাসীর উন্নয়নের বিষপোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও তৈলারদ্বীপ সেতু আমাদের করের টাকায় নির্মিতি তথাপি আমরা এই সেতুর প্রকৃত সুফল হতে বঞ্চিত।

একদিকে পাহাড় ও অন্যদিকে সমুদ্র ঘেরা অপরুপ সৌন্দর্যে ভরা এ বাঁশখালীতে আছে নান্দনিক ইকোপার্ক, চা বাগান ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সমুদ্র সৈকত। কিন্তু টোলের কারণে যাতায়াত খরচ বৃদ্ধির ফলে দর্শনার্থীরা বরাবরের মতোই নিরুৎসাহিত হচ্ছে।

অপার অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে রুদ্ধকরণ: কৌশলগত দিক থেকে বাঁশখালী বঙ্গোপসাগরের খুবই সন্নিকটে অবস্থিত হওয়ায় সমুদ্র বাণিজ্য ও শিল্পোন্নয়নের ক্ষেত্রে এর অপার সম্ভাবণা রয়েছে। কিন্তু এ টোলের কারণে এই বিশাল সম্ভাবনা প্রবলভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

কৃষিজাত পণ্য বাজারজাত /সরবরাহের ভারসাম্য সাধন: বাঁশখালী অঞ্চলটি তার উর্বর জমির জন্য পরিচিত। যা স্থানীয় চাহিদার চেয়ে বেশী পরিমাণে নানা ধরণের সবজি উৎপাদন করে। উদ্বৃত্ত কৃষিজাত পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সহজেই সরবরাহ করতে পারে না। সেতুর টোলের কারণে কৃষকরা ন্যায মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। টোল পরিহার করা হলে উদ্বৃত্ত কৃষিজাত পণ্য বাজারে বর্ধিত প্রবেশাধিকারের ফলে বাঁশখালীর কৃষকদের আয় প্রত্যাশার চেয়েও বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের জীবীকায় সার্বিক প্রভাব ফেলবে।

আরও পড়ুন  মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসরণে কাল শতাধিক গ্রামে ঈদ

অপেশাদারিত্বআচরণ ইজারাদারের: বাংলাদেশ টোল নীতিমালা ২০১৪ এ টোল প্লাজার কথা উল্লেখ রয়েছে। টোল আদায়ের জন্য টোল স্থাপনা সরঞ্জামাদি, সফটওয়্যার আইটি যন্ত্রপাতি ইত্যাদির কথা উল্লেখ থাকলেও কোন নজীর তৈলারদ্বীপ সেতুর ইজারাদার রাখেনি। বরং রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাতের ইশারায় গাড়ি দাড় করিয়ে টোল আদায় করা হয়। এই অপেশাদার আচারণের কারণে দীর্ঘ জ্যাম লেগেই থাকে। বিগত ২৬ এ জানুয়ারী পুকুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুসের ছোট ভাই মহিউদ্দিন (২৫), সিএনজি চালক (৫০) ও দেলোয়ার নামের একজন গুরুতর আহত হয়। এবং বিগত মাসের আগে বাসের সাথে সিএনজির মুখামুখি সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর ভিডিও দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগের মতে, এই সেতু দিয়ে দৈনিক ৪-৫ হাজার টেক্সি,২০০-৩০০ বাস ও ২০০-৩০০ পরিবহন ট্রাক যাতায়াত করে। যদি গড়ে ৫০০০ গাড়ি হিসাব করা হয়। প্রতি গাড়িতে ১০ জন যাত্রী এবং প্রতি জনের টোল আদায়ে ৫ মিনিট করে সময় নষ্ট হয় তবে জাতীয় ক্ষতির পরিমান ২,৫০,০০০ মিনিট বা ৪১৬৭ ঘন্টা, প্রতি ঘন্টা ১৫০ টাকা হিসাব করলে ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় ৬,২৫,০৫০ টাকা।

প্রতি গাড়িতে ২০০ মিলি অতিরিক্ত জ্বালানি অপচয় হলে ৫০০০ গাড়িতে ৫০ লক্ষ মিলি বা ৫০০০ লিটার, প্রতি লিটারে ১০০ টাকা হলে জ্বালানি বাবদ মোট ক্ষতি ৫ লক্ষ টাকা।

প্রতি শিপটে ৫ জন কর্মচারী হলে ৩ শিপটে ১৫ জন। প্রতিজনের মজুরি ৮০০ টাকা হলে ১৫ জনের মজুরী ১২০০০ টাকা। দৈনিক সর্বমোট আর্থিক ক্ষতি ১১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫০ টাকা মাসিক ৩ কোটি ৪১ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। বার্ষিক ৪০ কোটি ৯৩ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা।

জানা যায়, উক্ত সেতুর ইজারা হতে সরকারের আয় বার্ষিক ১১ কোটি টাকা। সুতরাং বার্ষিক সার্বিক ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ : আমি আবদুল ওয়াহেদ, পড়াশোনা করছি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ব বিভাগে। যে যুগে বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাকে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে একটি বিজ্ঞান সম্মত ডিজিটালাইজড শিক্ষা পদ্ধতি প্রণয়ন করেছেন সে যুগের একজন শিক্ষার্থী হিসাবে বাঁশখালী স্টুডেন্টন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমগ্র বাঁশখালীর আপামর জনসাধারণের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দূর্বার গতি থেকে পিছিয়ে পড়া বাঁশখালী কে শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ মডেল উপজেলায় রুপান্তর করার লক্ষ্যে তৈলারদ্বীপ সেতুর এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক টোল প্রত্যাহারের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন  বাঁশখালী স্টুডেন্টস'এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *