রহিম সৈকত ▪️
উপমহাদেশের সনাতনী সম্প্রদায়ের সিদ্ধপুরুষ শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ । ওই সম্প্রদায়ের লোকের নিকট তিনি পরম শ্রদ্ধার, আদর্শের, আরাধ্যদেবতা। তাঁরা বিশ্বাস করেন তিনি এমন এক সিদ্ধপুরুষ যিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন হানাহানি, সংঘাত, রক্তপাত বন্ধ করে মানবতাকে রক্ষা করতে। তাকে একজন যুগাবতার মানা হয়, বিশ্বাস করা হয় তিনিই ছিলেন ঋষি শিল্পের রুপকার। শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ তাঁরই গুরুজন শ্রীমৎ স্বামী জগদানন্দ পুরী মহারাজের স্নেহধন্য হয়ে তাঁরই জন্মস্থান চট্টগ্রামস্থ বাঁশখালীর ঋষিধামে এই অঞ্চলের ভক্তসাধারনের তীর্থ লাভের পথ সহজ করার লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালে বাঁশখালীর জঙ্গল কোকদন্ডীতে ঋষিধাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৫৭ থেকে প্রতি তিন বছর পর এখানে বসে আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ মেলা। এই মেলায় বিভিন্ন ধর্মের, বর্ণের মানুষের সমাগম হয়। আসেন বিভিন্ন দেশ থেকে সাধু, সন্যাসী, ঋষিগণ ও ভক্তশ্রেণী। তখন সমগ্র ঋষিধাম হয়ে উঠে সনাতনী সম্প্রদায়ের উৎসবস্থল।
সনাতন ধর্মের গ্রন্থ পুরান অনুসারে, ভারতের চারটি জায়গায় কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেগুলো হলো- উজ্জয়িনী, নাসিক, প্রয়াগ ও হরিদ্বার। এই চারটি স্থানে ৩ বছর পরপর চক্রাকারে কুম্ভমেলা বসে। সেই হিসাবে প্রত্যেক জায়গায় এই মেলা ১২ বছর পরপর ঘুরে আসে। একমাত্র বাঁশখালী ঋষিধামেই তিন বছর পরপর এই মেলার আয়োজন হয়।সনাতন ধর্মের গ্রন্থ পুরান অনুসারে, ভারতের চারটি জায়গায় কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেগুলো হলো- উজ্জয়িনী, নাসিক, প্রয়াগ ও হরিদ্বার। এই চারটি স্থানে ৩ বছর পরপর চক্রাকারে কুম্ভমেলা বসে। সেই হিসাবে প্রত্যেক জায়গায় এই মেলা ১২ বছর পরপর ঘুরে আসে। একমাত্র বাঁশখালী ঋষিধামেই তিন বছর পরপর এই মেলার আয়োজন হয়।
শিবকল্পতরু শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজের নির্দেশে ভক্ত প্রবর শহীদ নতুন চন্দ্র সিংহ ও সহধর্মিণী মনোরমা সিংহ তাঁদের জীবদ্দশায় ১৩৭০ সনে ঠাকুর মার দিঘী খনন করেন যা বর্তমানে শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ (মোহন্ত, ঋষিধাম ও তুলসীধাম) এর একান্ত প্রচেষ্টায় অদ্বৈতানন্দ সরোবর (ঠাকুর মার দিঘী)- এ রূপান্তর করেন এবং স্বামীজীর শ্রীচরণে উৎসর্গ করা হয়। “ঋষিধাম সংস্কৃত কলেজ” নামে একটি কলেজ স্থাপন করা হয় ১৯৬৯ সালে। ২০১০ সালের ১৯ মে (৪ ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪১৭ বঙ্গাব্দে) শ্রী গুরু সংঘের পরিচালনায় শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজের (মোহন্ত, ঋষিধাম ও তুলসীধাম) সার্বিক সহযোগিতায় “অদ্বৈতানন্দ দাতব্য চিকিৎসালয়” প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঋষিধামে শ্রী গুরু মন্দিরটি ২০১৭ সালের ১৯ মে (৪ ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দে) পুনঃনির্মাণ করা হয় এবং সেটি উদ্ভোধন করেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
কিভাবে আসবেন?
চট্টগ্রাম শহরে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল বা শাহ আমানত সেতু (নতুন ব্রীজ) সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে সরসরি বাঁশখালী গামী বাসে করে ৬০/৭০ টাকা ভাড়ায় রামদাস মুন্সির হাটে নামলেই চোখে পড়বে ঋষিদামের প্রবেশ পথ। প্রধান সড়ক হতে পায়ে হেটে কিছুদূর আগালেই চোখে পড়বে সুদৃশ্য ফটক। যার উপর হিন্দু ধর্মের পূজনীয় একটি গরুর ছবি।