রহিম সৈকত ◾

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মিস্টার জিন ম্যারিন বাংলাদের ঐতিহাসিক নিদর্শন, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্বলিত স্থান, ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের অংশ হিসাবে আজ পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলার, আনোয়ারা উপজেলার ঐতিহাসিক পরৈকোড়া জমিদার বাড়ি। এরপর তিনি যাবেন বাঁশখালীর মোগল জামে মসজিদ পরিদর্শনে। 


উল্লেখ্য পরৈকোড়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। যা অনেকের কাছে ”যোগেশ চন্দ্র রায়ের জমিদার বাড়ি ” নামে ও পরিচিত। জমিদার শান্তিরাম কানুনগো ১৬০০ শতকের দিকে এই জমিদার বংশের গোড়াপত্তন করেন। পরবর্তীতে তার পুত্র দেওয়ান বৈদ্যনাথ এই জমিদারী পরিচালনা করেন। তিনি তার জমিদারীর আমলে তার নামানুসারে চট্টগ্রাম শহরে “দেওয়ান বাজার” নামে একটি হাট প্রতিষ্ঠা করেন। দেওয়ান বৈধ্যনাথের পরে জমিদারী পরিচালনা করেন তার পুত্র হরচন্দ্র রায়। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। তাই তিনি দত্তক নেন গিরিশ চন্দ্রকে। এরপর তিনিই এই জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু গিরিশ চন্দ্র রায় মাত্র ২৭ বৎসর বয়সে ইন্তেকাল করলে তার স্ত্রী নয়নতারা যোগেশ চন্দ্রকে দত্তক নেন।
পরবর্তীতে তার মৃত্যু হলে এই পুরো জমিদারীর হাল ধরেন যোগেশ চন্দ্র রায়। এরপর তিনি দক্ষতার সাথে এই জমিদারী পরিচালনা করতে থাকেন। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী ও প্রজাহিতোষী জমিদার। তিনি পরৈকোড়া এলাকার একটা মধ্য ইংরেজি স্কুলকে তার পালক মায়ের নামে “নয়নতারা উচ্চ বিদ্যালয়” নামকরণ করে উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত করেন। তিনি প্রজাদের সুবিধার জন্য অনেক রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট ও পুকুর-দিঘী খনন করেন। এছাড়াও তিনি প্রজাদের চিঠি আদান-প্রদানের জন্য তার জমিদারী এলাকায় একটি পোস্ট অফিস এবং চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তাই তিনি প্রজাদের কাছে একজন সু-পরিচিত জমিদার ছিলেন। তাই এখনো এই জমিদার বাড়িকে তার নামেই অনেকে চেনেন। তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে “রায় বাহাদুর” উপাধি লাভ করেন। তারপরে তার ৩ পুত্র এই জমিদারী পরিচালনা করেন। তারা হলেন পূর্ণেন্দু, সুখেন্দু ও অমলেন্দু বিকাশ রায়।

আরও পড়ুন  রোজা সম্পর্কিত ৫টি হাদিস

এই সফরে সফর সঙ্গী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী, চট্টগ্রাম আলিয়স ফ্রাসেজের একজন কর্মকর্তা, আনোয়ারা উপজেলার নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যোগেশ চন্দ্র রায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এন্ড টেকনিক্যাল কলেজ এর অধ্যক্ষ সুধীর চক্রবর্তী, অধ্যাপক করবী চক্রবর্তী, অধ্যাপক জয়নব বেগম, অধ্যাপক পুলক দেব, অধ্যাপক মিজানুল ইসলাম, অধ্যাপক শাহিনুর আকতার, কলেজের হিসাব রক্ষক মোহাম্মদ ফরিদ (মনি), ল্যাব এসিট্যান্ট অসিম চক্রবর্তী,  সাংবাদিক মোরশেদ হোসেন, সুমন সাহা, মরিয়ম আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ দত্ত ক্রেডিট,  ইউটিউবার নীল জামশেদ, ইউপি সদস্য মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *