Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

শিকড় ৩; স্মৃতিচারণ মূলক লেখনীর ফলাফল

আমাদের কথা◾
স্মৃতি-রোমন্থন হলো অতীতের বিশেষ কোন সময়ে ঘটে যাওয়া খুশির, আনন্দ,বেদনার ঘটনার ব্যাপারে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়া। স্মৃতি-রোমন্থন শব্দটি গঠিত হয়েছে গ্রীক শব্দ νόστος (nóstos) থেকে, যার অর্থ বাড়িতে ফিরে আসা। আজকে বাড়ির সামনের বিরক্তির প্যাককাদার রাস্তাটি সময়ের ব্যবধানে আপনাকে স্মৃতিকাতর করে দিবে। অতীতের বিরক্তিকর বন্ধুগুলো বারবার আপনার স্মরণের বাতায়নে হানা দিবে।গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ অতীতের স্মৃতিচারণ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, সুখানুভূতি লাভ করে এবং তা কষ্টকর অতীত হলেও। বাঁশখালী এক্সপ্রেসের শুভানুধ্যায়ীর ৭০% বয়সে তরুণ। আমরা চেয়েছিলাম এই স্মৃতিচারণ আয়োজনের মাধ্যমে তাদের সোনালী অতীতের আলোকছটা যেন তাদের পুনরায় ছুঁয়ে যায়। এবং তাদের সুকুমারবৃত্তির চর্চাটা অব্যাহত থাকুক। এবং তাদের অভূতপূর্ব সাড়া আমাদের আয়োজনকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। একে একে তিন তিনটা সংখ্যাও বেরিয়ে গেল। আমরা লেখনী বিচারে যে তিনটি বিষয়কে সামনে রেখেছিলাম তা হল
▪️শুদ্ধ বানান চর্চা।
▪️প্রাঞ্জল উপস্থাপন।
▪️বাস্তবতার সাবলীল বর্ণনা।

এবং মূল্যয়নের দায়িত্বে ছিল বাঁশখালীর দুই মেধাবী তরুণ নুরুল মোক্তাদির ফয়সাল (ইংরেজি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়) যুগ্মসম্পাদক, বাঁশখালী এক্সপ্রেস, তৌহিদ চৌধুরী (বানিজ্য অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) নির্বাহী সম্পাদক, বাঁশখালী এক্সপ্রেস। কর্মব্যস্ততা স্বত্তেও আমার পীড়াপীড়িতে তারা আপনাদের লেখা দেখেছেন উপরোক্ত মানদন্ডের ভিত্তিতে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী আপনাদের সবার লেখনী খুব ভাল ছিল। তবে বেশিরভাগ বাস্তবতা বর্ণনার চেয়ে রূপকের আশ্রয় নিয়েছেন আর বানান চর্চার ক্ষেত্রে আরো সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।
যারা অংশ গ্রহন করেছেন সবাইকে অভিবাদন। আমাদের আগামী সংখ্যা “মা” মাকে নিয়ে লিখুন ফেলুন এবং পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেইল ঠিকানায়, হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে।

রহিম সৈকত,
প্রধান নির্বাহী, প্রকাশক,
বাঁশখালী এক্সপ্রেস।

শিকড় ৩ এর ফলাফল
◾ প্রথম স্থান
স্বপ্ন আর বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এইচএসসি পরবর্তী জীবনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাগুলো স্বপ্নের মতো সুন্দর হলেও বাস্তবতা হলো ভাগ্য কিংবা পারফরম্যান্স কোনটাই নিজের পক্ষে ছিল না। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া কোন এক গল্পের মতোই শাটলের স্বপ্নকে গলা টিপে হত্যা করে দুহাজার ষোল সালের ৭ই জানুয়ারি ভর্তি হই বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে, অপরিচিত পরিবেশে অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এর পর আস্তে আস্তে ক্লাসে যাওয়া শুরু, অপরিচিত ক্যাম্পাস, অপরিচিত সহপাঠী সাথে স্যার ম্যামরাও ছিলেন অপরিচিত। ধীরে ধীরে সবার সাথে পরিচিত হওয়ার আগেই ইউজিসির সিদ্ধান্তের কারণে মেইন ক্যাম্পাস চন্দনাইশের বিজিসি বিদ্যানগরে চলে আসতে হলো। ঘুমঘুম চোখে ভার্সিটির বাস ধরতে বের হলাম, চললাম বিদ্যানগরের পথে অসম্ভব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর ভালবাসার সবটুকু উজাড় করে  আমাদের অপেক্ষায় ছিল প্রিয় বিজিসি। সাদামাটা সিটি ক্যাম্পাসের অল্প কয়দিনের কোলাহল ভুলে বিদ্যানগরের একশো এক একরের প্রেমে পড়ে যাওয়া, করিডোর, ক্লাসরুম, চেয়ারম্যানের দোকান, ক্যাফে আড্ডা, শহিদ মিনার, ফুটবল মাঠ, লেকের পাড় যেন প্রকৃতি একগুচ্ছ গোলাপের মতো তার সব সৌন্দর্য একত্রিত করে রেখেছে। এমপির দোকানের আড্ডা, তালে তালে বকুল ফুল আর নগর বাউল জেমসের সেইতুমি সব অতৃপ্তি না-পাওয়া ভুলিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল সময়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সবচেয়ে মজার স্মৃতি হচ্ছে ম্যাম প্রেজেন্টেশন নেয়ার কথা ছিল সবাই যার যার মতো ফরমাল ড্রেসে ক্যাম্পাস গেছিল সেদিন কিন্ত আমি ক্যাজুয়াল ড্রেসে গেছিলাম প্রেজেন্টেশন দিবো না এরকম একটা মানসিকতা নিয়ে কিন্তু ক্যাম্পাস গিয়ে সবাই প্রেজেন্টেশন দিচ্ছে দেখে মনে হলো আমারও দেয়া উচিত, এক জুনিয়রকে ধরে রিকুয়েষ্ট করে তার কাছে থাকা ফরমাল প্যান্ট নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে চেইঞ্জ করে প্রেজেন্টেশন দিছিলাম এইটা নিয়ে সবাই অনেকদিন পঁচাইছিল।আর-একবার ক্লাস বোরিং লাগাতে পিছনে বসে মোবাইলে গেমস খেলতেছিলাম হঠাৎ ম্যাম টের পেয়ে যায় সামনে ডেকে নিয়ে গিয়ে বলে এতোক্ষণ যা পড়াইছি রিভিউ দাও আমি তো পুরো হতভম্ব, কি পরিমান নার্ভাস আর লজ্জায় পড়ে গেছিলাম সেটা বুঝানো যাবে না প্রায় কান্না করে দেয়ার অবস্থা। এরকম সেরা অনেক মুহূর্তের সাক্ষী প্রিয় ক্যাম্পাস।শ্রদ্ধার,সম্মানের আর ভালবাসার প্রিয় শাহরিয়ার স্যার, আমান স্যার, সাইফুল স্যার, সালমা ম্যাম, নওরিন ম্যাম সব স্যারম্যামদের ক্লাসের ফাঁকে মোটিভেট করা কথাগুলো এখনো কানে বাজে।স্রষ্টা প্রদত্ত  একটা অসাধারণ বুঝানোর ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় শিক্ষাগুরুরা।ফুটবল টুর্নামেন্ট, ক্রিকেট টুর্নামেন্টের টানা তিন ম্যাচ জেতানো ম্যান অব দ্য ম্যাচ, ইনডোর গেমের প্রত্যেকটা মূহুর্ত যেন লিখিত এক-একটা উপন্যাস। বিদায়ের দিন শিরোনামহীন ব্যান্ডের পুরনো সেই দিনের কথা গানের সাথে কান্নায় টিশার্ট ভিজিয়ে ফেলা, ফ্ল্যাসমভে নাচানাচি করা,,প্রিয় বন্ধুগুলো আর জুনিয়দের জড়িয়ে কান্নাকরা আজও খুব ভীষনভাবে মিস করি। আসিফের ভুলভাল ইংরেজি, নিশাতের নাচানাচি, নাদিমের খুনসুটি, লিসার মেজাজ, লিপির সুন্দর সম্বোধন, মামুনের নিরবতা, প্রিতমের হাসি সবকিছু কফি হাউসের সোনালী বিকেলের মতোই।মুঠোফোনের গ্যালারিতে ডু মারলেই কোন এক অজানা কারণে চোখের কোণে জল এসে নস্টালজিক করে দেয়া স্মৃতিগুলো খুব যত্ন করে বুক পকেটে রেখে দিয়েছি। আগামী প্রজন্মকে আমি গল্পগুলো অদ্ভুত মুগ্ধতায় শুনাবো। রুপকথার মতো আমারও একটা গল্প ছিল, ভুবনজয়ী গল্প, প্রাপ্তির গল্প,চারটা বসন্তের গল্প।

শাহরিয়াজ চৌধুরী রাকিব
বিবিএ -২৭তম ব্যাচ
বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ
এমবিএ অধ্যয়নরত

◾দ্বিতীয় স্থান
আমার শিকড় পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ, জীবনের শুরু থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানে আমার পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে, কিন্তু আমার কলেজ আমার শিকড়ের মতো এত মধুর স্মৃতি, এত মধুর সর্ম্পক অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে আমার তৈরি হয়নি। তার অন্যতম কারণ আমার কলেজের স্যারেরা। আমার কলেজের স্যারদের মতো এত ভাল, এত বন্ধুসুলভ স্যার আমি আমার শিক্ষাজীবনে কমই দেখছি। উনারা আমার মতেই সেরা শিক্ষক, যাদের কাছে ছাত্রছাত্রীদের চাওয়া-পাওয়াটায় আগে। আমার কলেজের কনক স্যার, সুমন স্যার, মিজান স্যার, জমির স্যার, আনোয়ার স্যার, বাবলা স্যার, নাসির স্যার বলতে গেলে সব স্যাররাই খুব বেশি ভাল ছিল কখনো স্যারদের নিয়ে অভিযোগ করার সুযোগ হয়নি। বছরখানেকের জন্য এসেছিল জাহেদ স্যার উনিও এতই ভাল ছিলেন যে আমাদের শুধু পাঠদান মনোযোগ দিলে যথেষ্ট ছিল। কারণ স্যাররা এত ভালবাসা আর  দায়িত্ব নিয়ে আমাদের ক্লাস করাতেন যে আমাদের অন্য কোন চিন্তা করতে হতো না।  আমার কলেজে আমার স্মৃতিময় দিনের শেষ নাই। এখনো মনে পড়ে সকালে গিয়ে আগে কলেজ টা ঘুরে দেখতে হতো তারপর একে একে সবাই আসলে সবাইকে জ্বালানো সবকিছু চোখের সামনে ভাসে। স্যার,  বন্ধুবান্ধবদের এত বেশি জ্বালাইছি যা কেউ কখনো ভুলবেনা। আমাদের ৫/৬জনের একটা গ্যাং ছিল, যেখানে আমি আর মিলি ছিলাম অতি ভদ্র মানুষ। এতই শয়তানি করতাম যে কলেজে পর্যন্ত বাজি ফুটাইতে ছাড়িনি। সকালে ক্লাস শুরু হবে স্যাররা ক্লাসে যাচ্ছে এমন সময় এতই বিকট শব্দ সবাই ভয়ে দেখতে আসে কি হলো। আমি তো সাধু চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছি স্যাররা কি বলে। মিজান স্যার বলে এই কাজ কে করলো কলেজে বাজি ফুটায়, সবার মাঝে সুমন স্যার বুঝতে পারে কাজটা আমি করছি স্যার তো আর যায় হউক আমাকে ধরিয়ে দিবেনা বেশি ভালবাসতো আমাকে। সবাই চলে যাওয়ার পর স্যার আমাকে বলে এরকম কাজ কেউ করে, তোকে বেশি মারা মারবো। মিজান স্যার জানলে তো আজ শাস্তি দিত। এরকম কত অঘটন যে কলেজে ঘটায়ছি যা এখন স্মৃতি। কলেজে গেলে হুশ থাকতো না  কি করতাম কিভাবে হাটতাম। একবার সবাই মিলে ক্যান্টিনে নাস্তা করতে যাচ্ছিলাম আমি যে ক্যান্টিনের দরজার সামনে যাবো ধড়াম করে পরে চিৎ হয়ে গেছি। বৃষ্টির দিন ছিল ওদিন ভাগ্য ভালো একটুর জন্য রেহাই পাইছি কেউ দেখেনি আমার গ্যাং ছাড়া। কত শত মধুর স্মৃতি ছিল যাহ লিখে শেষ করা যাবেনা এরকম বৃষ্টির দিনে সবাই যখন কলেজ ছুটি হলে বাড়ি ফিরতাম তখন ছাতা নিয়ে যাওয়া শর্তেও বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাড়ি যেতাম।আহ কি দিন ছিল সেদিন গুলো যদি আবার ফিরে পেতাম। জানি সময়ের সাথে সাথে সব বদলে যায় কিন্তু দিন গুলো আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে জীবনে।
২০০/৩০০ শব্দে আমার স্মৃতি শেষ করা যাবেনা তাই ইচ্ছে থাকা শর্তেও আর লিখা হলো না।

আফরোজা আঁখি
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ
এইচএসসি-২০১৫

◾সম্মিলিত ৩য় স্থান,
মাঈনুল মান্নান
মামুন সজীব জয়
আব্দুস সোবহান
সাদিয়া সোলতানা ইছমত
জাবের উদ্দিন মাহমুদ

▪️অনেকটা হুট করেই স্কুল জীবন শেষ, কলেজ ভর্তির চিন্তা-ভাবনা করার আগেই দেখি আমাদের বাড়িতে কলেজ শিক্ষকদের হানা, মিজান স্যার, কনক স্যার সহ আরো কয়েকজন স্যার উপস্থিত বাড়িতে, ঘরের সবার পরিচিতও স্যারেরা (ছাত্রছাত্রী হওয়ায়) আব্বার সাথেও প্রায় স্যারের সখ্যতা-বন্ধুত্ব। অবশ্য স্যারেরা এভাবে এর আগে আরো কয়েকবার বাড়িতে এসেছেন বড় আপুদের এবং একমাত্র বড় ভাই এসএসসি পাশ করার পর (তখন কলেজে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করানোর জন্য কলেজ শিক্ষকরা স্কুল থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের তালিকা নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেতেন।) আব্বা স্যারদের কথা দিলেন আমিও বড় পাঁচ ভাইবোনের মত পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রী কলেজ এর একাদশ শ্রেণীর ছাত্র হয়ে গেলাম।

কলেজের প্রায় সব ছাত্রছাত্রী পরিচিত সবাই পশ্চিম বাঁশখালীর সন্তান। পরিচিত এলাকা হওয়ায় স্কুলের সাথে কলেজের পার্থক্য ছিল না শুধুমাত্র স্যারের চেহেরা আর ব্যাপক স্বাধীনতা ছাড়া। ক্লাস চলছে আর স্যারদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি হচ্ছে কনক স্যার, বাবলা স্যার, নুরুল আলম, স্যার মিজান স্যার, কলেজের সকল শিক্ষক যাদের ক্লাস ছিল না উনারাও বাইনেইমে চিনেন কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্টানে অংশগ্রহনের জন্য। কলেজ স্মৃতির সবচেয়ে বড় অংশ জুড়ে আছে শহিদ মিনার নির্মানের স্মৃতি। অধ্যক্ষ বরাবর বাবলা স্যারের সহযোগিতায় ব্যাচের পক্ষে আবেদন করা হল, প্রস্তাবও পাশ হল, শর্ত ছাত্রছাত্রীদের আর্থিক ও শারীরিক শ্রমের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে হবে। দু-টাতেই দলবেঁধে অংশ গ্রহনের স্মৃতি এখনো আন্দোলিত করে,এখনো কলেজ গেলে শহিদ মিনার ছুয়ে সেই অনুভূতি নিই। আরেকটা স্মৃতি এখনো হৃদয় নাড়া দেয় বাঁশখালী কলেজের শিক্ষক মানিক দে স্যারের দৃষ্টিমিশনের অনুষ্ঠানে আমাদের কলেজের পক্ষে আমরা পাঁচজন অংশগ্রহন করি ও বিজয়ী হওয়ার পরের দিনেই কলেজের সকল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বাবলা স্যারের দেওয়া উপস্থিত সংবর্ধনার কথা। স্মৃতির আবেগে নাড়া দিলেও বাঁশখালী এক্সপ্রেসের শর্তে শব্দে লাগাম টানতে হলো এতটুকুতেই, চট্টগ্রাম কলেজের স্মৃতি তোলা রইল।

মাঈনুল মান্নান
ব্যাচ -১১
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রী কলেজ।

▪️আমার কলেজ জীবন কেটেছে  বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজে। স্কুলের পথ চুকিয়ে যখন কলেজ জীবনে পদার্পন করলাম কেমন হবে কলেজ জীবন এটা নিয়ে প্রথম প্রথম এক অন্যরকম অনুভুতি কাজ করতো। রাজনীতি বন্ধু বান্ধুবের সাথে হৈ হুল্লা খেলাধুলায় কেটে যাচ্ছিল ফার্স্টইয়ার, কলেজে একদিন মোবাইল নিয়ে  গেছিলাম। আমার কাছ থেকে মোবাইল টি দেখার জন্য বন্ধু বিশু হাতে নেয়। তারপর  হঠাৎ ক্লাস নিতে চলে আসে রাষ্ট্র বিজ্ঞান এর শিক্ষক  শ্রদ্ধেয় আমির হোসেন স্যার। ক্লাস চলাকালীন সময়ে সে ছবি তুলে  এইটা স্যার দেখে  ফেলে।  এতে স্যার তার হাত থেকে মোবাইল নিয়ে নেয়। এবং তাকে অনেকে বকা দেয় আমিও চুপ থাকি। পরে মোবাইল আর দিবেনা বলে ক্লাস শেষ করে প্রিন্সিপাল  আবু হোসেন স্যার এর নিকট নিয়ে জমা দেয়। পরে ডাক আসে স্যার এর রুমে গিয়ে স্যার জানতে পারে মোবাইল এর প্রকৃত মালিক আমি। স্যার আমাকে জিগ্যেস করে আমি কেন মোবাইল আনছি। বকা দেয়।  এই বয়সে মোবাইল ব্যবহার করি কেন? পরে বলে তোমার আব্বুর নাম্বার দাও। আমি বলি নেই বাবার মোবাইল নেই  ব্যবহার করেনা। স্যার তো তখন আরো বেশি গরম হয়ে যায়। বলে বাবা মোবাইল ব্যবহার করেনা। তুমি ব্যবহার কর ফাজিল ছেলে। পরে জিগ্যেস করে এই মোবাইল তোমাকে কে কিনে দিছে। আমি বলি মা কিনে দিছে। জিগ্যেস করে তোমার মা টাকা কই পেয়েছে?  আমি বলি মামারা দিছে সেইখান থেকে কিনে দিছে। তারপর রাগ করে বলে তোমার আব্বুকে আসতে বল কলেজে আমি বলি স্যার আমার বাবা জানলে আমাকে মারবে আমি মোবাইল নিছি এই কথা বাবাও জানেনা। স্যার বলে তোমার বাবার কাছে  কিভাবে খবর পাঠাব বল’  পরে স্যার বাড়ির পাশে আমার এক কাজিন ছিল বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের সাবেক ছাত্র বর্তমানে সে সেনাবাহিনীতে জব করে যদিও সে আমার বন্ধু সমতুল্য ছিল।  তখন সে বাড়িতে ছুটিতে ছিল আমি তার নাম্বার দিই। আমার সম্পর্কে থাকে কল দিয়ে আমার পরিবারে বলতে বলে আর ভবিষ্যতে মোবাইল যাতে না আনে তার নিশ্চয়তা দেন। সত্যি বলতে আমি টিউশনি করে অনেক কষ্ট এই মোবাইল টি কিনেছিলাম। যদিও পরে কলেজে গেলে মোবাইল নিয়ে গেছি চুরি করে। কিন্তুু ভুলেও পকেটে থেকে বের করতাম না। স্মৃতিচারণ করতে গেলে আরো অনেক কাহিনী মনে পড়ে যায়।   ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর
ডিগ্রীতে একই কলেজে ভর্তি হই। তখন অবশ্যই জোরালো ভাবে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি।   কলেজের সিনিয়র হিসাবে পাশাপাশি একটি ছাত্র সংগঠন এর প্রতিনিধিত্ব কারী হিসাবে ইন্টার ফার্স্টইয়ারের  নবীনবরণ করতে গিয়ে  এক মায়াবতী কে ফুল দিতে গিয়ে মন সহ দিয়ে বসলাম,তাকে দুর থেকে নজরে নজরে রাখতাম কিছু বলার সাহস পেতাম না। কিছুদিন পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় সেখানে  যখন শুনি মাইকে ঐ মায়াবতীর কুকিল কন্ঠে মধুর সুরে গান আমি তো শেষ ফিদা হয়ে গেলাম। মন কি আর বুঝে বন্ধু বান্ধুবির সহযোগীতায় বাকিটা হয়ে গেলো, লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করা কলেজ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে যাওয়া এক অন্য রকম অনুভুতি ছিলো।হাসি আনন্দের দিনগুলো আস্তে  আস্তে অতিবাহিত হয়ে  কলেজ এর দিনগুলো ঘনিয়ে এলো। ডিগ্রী পরীক্ষার পর জীবনের সুমধুর স্মৃতির ইতি টেনে চলে গেলাম চট্টগ্রাম কলেজে। এখনো মনে পড়ে জীবনের সেই মধুর স্নৃতিগুলো। এখনো কলেজের সেই বন্ধুদের সাথে দেখা হলে কলেজ জীবনের স্মৃতি ভেসে উঠে আমাদের আড্ডায়। তবে বন্ধুদের সাথে দেখা হলে ও সেই মায়াবতীর সাথে এখন আর দেখা হয় না।

আরও পড়ুন  নাপুউবির প্রাক্তনদের গল্প লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী

আজ এইটুকুই।

মামুন সজীব জয়
বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজ।
এইচএসসি-২০১০
১নং পুকুরিয়া ইউনিয়ন
চাঁদপুর,বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
▪️
আমি হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল তথা স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলছি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটা দেখছিলাম ঠিকই কিন্তু সেইখানে পড়তে গেলে প্রিয়জনদের ছেড়ে চলে যাইতে হবে সেইটা কখনো ভাবিনি।আম্মু-আব্বু,ভাই-বোন তথা আমার শুভাকাঙ্ক্ষীর মুখে হাসি ফুটিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।প্রথমে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার ইচ্ছা থাকলেও পরবর্তীতে মেজো ভাই খোঁজ খবর নিয়ে বলল হলে থাকলে ভালো হবে।আর হলে থাকলে আমিও নাকি একটু চালাক চতুর হবো।
যাইহোক,২রা জানুয়ারি ২০২০,আমার হলে  উঠার প্রথম দিন,আমার জন্য বরাদ্দ হলো হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল।মেজো ভাইকে সাথে নিয়ে হল গেইটে আসলাম।হলের বড় ভাই দেখিয়ে দিলো ৪০-৫০ জনের ১০২৬ নাম্বার গণরুমটি আমার।সেইখানেই আমার থাকা লাগবে।আমার চোখে মুখে নিজের গ্রাম ছেড়ে আসার সে কি আকুলতা।প্রথম রাতে হলে এসে কিছুই খেতে পারিনি। আবাস ছেড়ে নতুন আবাস কিংবা চূড়ান্ত গন্তব্যে আসার পরও অন্তরে তীব্র হাহাকার।একে একে হলে নতুন বন্ধুরা উঠা শুরু করলো।নতুন শহর,নতুন পরিবেশ,সব নতুন মুখ,মানিয়ে নিতে হবে সবকিছু।হলে উঠার ঠিক তিনদিন পর রাত ১১ টায় ডাক পড়লো গেস্টরুমের জন্য। আমরা অনেকই বুঝতে পারিনি জিনিসটা আসলে কি? সবাই মিলে গেস্টরুমে গিয়ে জড়সড় হয়ে বসলাম। আমাদের হলের ২য় বর্ষের ভাইয়ারা আসলেন।এক এক করে আমরা সবাই সবার পরিচয় দিলাম।ক্যাম্পাস ও হলে স্বাভাবিকভাবে চলার জন্য যেসব অত্যাবশ্যকীয় নিয়ম-কানুন প্রয়োজন তা শিখিয়ে দিলেন দ্বিতীয় বর্ষের ভাইয়ারা। শিখিয়ে দিলেন,চেইন অব কমান্ড কি?।
এরপর থেকে ক্যাম্পাসে আমাদের ছুটে চলা শুরু।নিদ্রাহীন দুটি চক্ষু নিয়ে হলের বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসের প্রতিটা ইট-পাথর,ভাস্কর্য,স্থাপনা, চত্বর অনুসন্ধানের নেশায় রাতভর দলবেধে হাঁটতাম। ফেরার পথে কত খুনসুটি,কত গান! মাঝে মাঝে মধুর ক্যান্টিন,বটতলা কিংবা টিএসসি তে পলিটিকাল প্রোগ্রাম থাকতো।সেখানে দলবেঁধে  আমরা বন্ধুরা যেতাম।প্রতিটি মনে তখন উঁকি দিতো হ্যাঁ,এই মধুর ক্যান্টিন কিংবা ডাকসু থেকেই তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ বপন করা হয়েছিলো। এখান থেকেই তো ভাষা আন্দোলনের সূচনা। এই ক্যাম্পাস ই তো তার সূতিকাগার।আমরা ভাবতাম উদ্যানের এই সোনার মাটিতে দাড়িয়েই তো বঙ্গবন্ধু আমাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন,এই সেই বটতলা যেখানে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়েছিল। এভাবে প্রতিটি খুনসুটি,আবেগ অনুভূতির আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের বৃহৎ রাজত্বের ছোট্ট প্রাসাদটিতে (গণরুমে)আমরা স্বর্গসুখ নিয়ে আসতাম। এখন,আমি শেকড়ের কোনো এক বদ্ধ রুমে শুয়ে শুয়ে লিখছি,নিদ্রাহীন দুটি চক্ষু নিয়ে হলের বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসের প্রতিটা ইট-পাথর,ভাস্কর্য,স্থাপনা,চত্বর অনুসন্ধানের নেশায় রাতভর দলবেধে ছুটে চলার স্মৃতিগুলো……

লেখক:আব্দুস সোবহান
বর্তমান শিক্ষার্থী:
বিবিএ,১ম বর্ষ,মার্কেটিং বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সেশন:২০১৯-২০২০
সাবেক শিক্ষার্থী:
সরকারি কমার্স কলেজ,চট্টগ্রাম
ঠিকানা: দক্ষিণ বাগমারা,৬নং (ক) কাথরিয়া ইউনিয়ন,বাঁশখালী,চট্টগ্রাম
▪️
আমার স্কুল লাইফটা ছিল অনেক মজার । সেই তুলনায় কলেজ লাইফটা অনেকটা সাদামাটা। কারণ কলেজ লাইফে বন্ধু-বান্ধব সব ছড়িয়ে চিটিয়ে যায়। সবচেয়ে মজার স্মৃতি আলাদা করতে পারব না, তবে প্রথম দিনের স্মৃতিটা মজারই ছিল। সেইদিন মাঝ বয়সী  যাকেই দেখেছিলাম তাকেই স্যার মনে করেছিলাম,তবে লুৎফর রহমান স্যার কে দেখে ক্লাসমেট মনে করেছিলাম,পরে যখন দেখি ক্লাসমেট ভাবা ছেলেটা আমাদের  বাংলা শিক্ষক আমি তো পুরাই অবাক!
এতক্ষণ তো মজারটা বললাম, বেদনার ও একটা আছে, আমার বাড়ি কলেজের পুকুর পাড়ের পশ্চিম পাশে হওয়াতে, কলেজ পালাতে একটা বিষেশ সুবিধা ছিলো পুকুর পাড়ের কাটা তারের মাঝখান দিয়ে চলে আসা যেতো। প্রায় সময় আসা যাওয়া চলতো ঠিকটাক কিন্তু ঘটনা হইলো কি একদিন আসতে গিয়ে কাটাতারে লেগে কলেজের   ইউনিফর্ম চিরে গেছিলো বাসায় এসে ছেড়ার কারণ বলতে না পেরে সেই লেভেলের বকুনি  শুনতে হইছিলো।

সাদিয়া সোলতানা ইছমত।
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রী কলেজ।
এইচএসসি–২০১৮
দিঘীর পাড়া,বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।
▪️
অনাকাঙ্ক্ষিত মজার একটা স্মৃতিচারণ।
গত কয়েক মাস পূর্বে একটা বিশেষ কাজে কলেজে গেছিলাম। ক্যাম্পাসের হাঁটছিলাম আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম। সামনে একজন ইয়াং করে ভদ্রলোক দাড়িয়ে আছেন। তিনি আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,
ভদ্রলোক :কাউকে খুজতেছ?
আমি: না ভাইয়া।
ভদ্রলোক :ওহ্। কোন ক্লাসে পড়?
আমি:ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে ভাইয়া।
ভদ্রলোক: কোন সেকশানে?
আমি:এফ সেকশানে ভাইয়া।
ভদ্রলোক :ওহ্।আমি( ছ নাকি জ সেকশান বলছিল বুঝিনাই)  সেকশানের হাইয়ার ম্যাথের টিচার।
আমি:(আমি তো প্রায় কোমায় চলে গেছিলাম)সরি স্যার।
স্যার: ইটস্ ওকে।
আমি: স্যার আসলে আপনাকে দেখিনাই তো কোনোদিন তাই চিনি নাই যে,করোনাই সবকিছু শেষ করে দিছে স্যার।
স্যার:আসলেই।
___
অধ্যক্ষ মহোদয়ের অফিসের দিকে যাচ্ছিলাম। স্যার ছ সেকশানের ফিজিক্সের স্যার সহ একইদিকে আসছিলেন।আমার তো লজ্জায় পুরো মাথায় হেট হয়ে যাচ্ছিল।
স্যারকে ভাইয়া ডাকার কথাটা ফিজিক্স স্যারকে বললেন। দুইজনেই মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলেন,আর আমি লজ্জা মাখা হাসি দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে করোনা ভাইরাসকে মনে মনে শালীনতা বজায় রেখে গালি দিচ্ছিলাম।
___
নাম:জাবের উদ্দিন মাহমুদ
হাজেরা তজু ইউনিভার্সিটি কলেজ।
এইচএসসি ব্যাচ ২০২২
স্থায়ী ঠিকানা:বাহারচরা, বাঁশখালী,চট্টগ্রাম।
অস্থায়ী ঠিকানা:রাহাত্তারপুল,আতুরার দোকানের মোড়,চকবাজার।

◾সম্মিলিতভাবে ৪র্থ স্থান
ফাহামিদা সোলতানা
রাশেদুল ইসলাম মিশকাত
শাহেনেওয়াজ উদ্দীন চৌঃ
আকতার হোসাইন
রিদোয়ান আমিন
আসমা খানম লিজা
মুহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম
▪️এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হওয়ার পর আমি প্রায়ই কলেজের দিনটি কেমন হবে সে কথা ভাবতাম, কলেজ জীবন শিক্ষাক্ষেত্রের দ্বিতীয় ধাপ,অনেকটা অপরিণত মানুষ হতে পরিণত মানুষে রূপান্তরিত হওয়া। তাই স্বাভাবিকভাবেই কলেজের প্রথম দিন আমার জন্য ছিল উত্তেজনাকর। জীবনের নতুন পর্বের সূচনা দিনটি ছিলো ০১ জুলাই  ২০১৯, আকাশ মেঘে ঢাকা। আর প্রশান্তি ভরা সেই এক আশ্চর্য দিন। নিজের পছন্দমতো কলেজে  ভর্তি হতে পারার  এবং নতুন অভিজ্ঞতা লাভের আশায় আমি উন্মুখ ছিলাম। সেই  সঙ্গে ছিল নতুন শিহরণ। খুব সুন্দর আয়োজন এবং আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে আমাদের স্বাগতম জানানো হলো, বড় ভাই বোনেরা রজনীগন্ধা ফুল ও কলম দিয়ে আমাদের বরণ করে নিলো।একটা বড় আপু সবাই কে একটা একটা করে কলম দিয়ে ছিলো।কিন্তু আমাকে এক সাথে তিনটি কলম দিয়ে ছিলো। এ থেকে শুরু হয়েছিল ওরিয়েন্টেশন ক্লাস। তারপর মনোযোগ দিয়ে আমাদের কলেজের স্যারদের বক্তব্য শুনলাম। আমার প্রাণপ্রিয়  কলেজের অধ্যক্ষের কিছু কথা এখনো আমার ভেসে আসে। নতুন শতকে পা রেখে কলেজ জীবন শুরু করায় তিনি আমাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।তার আবেগময় বক্ততায় আমরা আপ্লূত হলাম।তিন উপদেশ দিলেন!জীবনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকতে  পরামর্শ দিলেন।খোলামনে যুক্তিবাদী উদার মন নিয়ে
জ্ঞান আহরণ করতে। দ্বিতীয়জনের কিছু কথা যিনি হলেন আমাদের প্রাণপ্রিয়  কলেজ  প্রতিষ্টাতা মুজিবর রহমান।তিনি অত্যন্ত উদার মনের মানুষ।তিনি তার ভাষণে আমাদেরকে তিনটি কাজ করতে নিষেধ করেছিলেন।
১. কলেজে রাজনীতি করা যাবে না
২.ধূমপান না করা
৩.আঞ্চলিক  ভাষায়  কথা না বলতে।আমাদের হাসানোর জন্য আরো একটা সুন্দর কথা উপহার দিয়েছেন: তোমাদেরকে আমরা বরণ করার আগে বৃষ্টি বরণ করে নিয়েছে।কেননা সেই দিন কলেজ গেইটে ঢুকার আগে  ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছিলো।সবচেয়ে বেশি ভালোলেগে ছিলো  কলেজের চারপাশের পরিবেশ।পরিশেষে বাসায় ফিরলম অদ্ভুত এক অনুভূতি নিয়ে।কলেজের সব কিছু আমার ভালো লেগেছিল।শুধু  ভয় লাগলো এই  ভেবে যুগের হাওয়ায় তাল মেলাতে গিয়ে আবার পড়ালেখা তাল কেটে যাবে নাতো!মনে মনে ঠিক করলম পড়ালেখা আর আনন্দ দুটোই এক সাথে   উপভোগ করতে হবে।                                             ফাহামিদা সোলতানা
এইচএসসি ২০২১,
মানবিক
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ।
▪️
পশ্চিম বাঁশখালী  উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ #
আমি সেই পরিবারে কথা বলতেছি যে পরিবার আমাকে দিয়েছে অসীম ভালোবাসা, জাগিয় তুলেছে ঘুমন্ত  আত্মাকে, শিখিয়েছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে,  ন্যায়কে বুকে করে লড়তে এই মিথ্যা সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে। উপকূলীয় কলেজ এমন একটি কলেজ যার তুলনা হয়না এই দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোন কলেজের সাথে! এই কলেজের ইট, পাথর, বালিও মাটির প্রতিটি কণা ভালোবাসতে জানে ছাত্র -ছাত্রীকে! চির সবুজের সমারোহ প্রিয় ক্যাম্পাস! কোন পড়ন্ত বিকেলে আপনি ঘুরতে আসিবেন, পুকুর পাড়ে বসবেন মন চাইলে বাতবিলেবুর ঘ্রাণ নিবেন, আপনার অজান্তে করবেন আবৃত্তি কবিতা তখন অনুভব করবেন আপনিও কবি! এটা হচ্ছে উপকূলীয় কলেজের জাদু! আপনারা আমার সমালোচনা করবেনা যতোদিন না আপনার কলেজ যাত্রা শেষ হচ্ছেনা! একি অদ্ভুত কথা,আপনি এমন ভাব্বে পাঠদান দিবেন যেনো আমি সেই প্রাইমারীর খোকা, এমন নিয়মে চালাবেন যা অসহ্য! যাহোক আমি যখন যাত্রী তখন ড্রাইভার যে রোড দিয়ে নিয়ে যাই সেই রোড দিয়ে যেতে হবে! তখন বুঝতে পারি নাই আমার শিক্ষক যে রোড দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেই পথে বিপদ নেই। সেই শিক্ষকের প্রতিটি কথা আজ আমার জীবনে অপরিহার্য জীবন চলার পথে!আমার জীবনের ইতিবাচক ভঙ্গির একাংশ জড়িত আমার শ্রদ্বেয় শিক্ষক লুৎফর রহমান স্যার। আমাকে একান্ত ভাবে চেনেও না জানেও না,হয়তো এটা আমার ব্যার্থতা! মহাকাব্যা এক মহাবীর আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয় যিনি লালন করে যাচ্ছে উপকূলীয় কলেজ পরিবারকে! তিনি যতোটা ভালোবাসে উপকূলীয় কলেজ কে ততোটা উনার পরিবার কে ভালোবাসে কিনা আমার সন্দেহ আছে, যতোটা যত্ন করে ছাত্র-ছাত্রী কে নিজের সন্তান কে অতোটা যত্ন করে কিনা আমার জানা নাই! তাই তিনি মহাকাব্যের মহানায়ক। নিঃসন্দেহে বলতে পারি শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ জাকের হোছাইন স্যার জাতি গড়ার নৈপূণ্য কারিগর। অন্য প্রান্তে মানবতার দৃষ্টান্ত উদার মন নিয়ে, সঠিক ইতিহাস কে তুলে ধরতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসতেছেন উপকূলীয় সৃষ্টির লগ্ন হতে আজ পর্যন্ত, তিনি আর কেউ নয় ছাত্র -ছাত্রীদের আশ্রয়দাতা শ্রদ্ধেয় উপাধ্যক্ষ বশির উদ্দিন আহমেদ কনক স্যার।
   বলতে দ্বিধা নেই
“ভালোবাসি উপকূলীয় পরিবার কে”
” ভালোবাসি উপকূলীয় ধূলিকণা কে”
নামঃ রাশেদুল ইসলাম মিশকাত
প্রতিষ্ঠানঃ পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ
ব্যাচঃ ২০২০ ইং
ঠিকানাঃ ইলশা,বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
▪️
কলেজে কত তারিখ ভর্তি হলাম প্রায় ভুলে গেছি! যাক, পড়ে গেলো ওরিয়েন্টশন ক্লাসের ডাক। অনেকে বলছে যে, ২০১৯ পহেলা জুলাই তারিখ নাকি ওরিয়েন্টশন ক্লাস শুরু হবে। তখন আমি কথাটি শুনে আনন্দের উল্লাসে অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিলাম যে, ঐদিন কলেজে সুন্দর পোশাক পরিধান করে ওরিয়েন্টশন ক্লাসে উপস্থিত হবো। বেশ আর দেরি না করেই ঠিক ওরিয়েন্টশন ক্লাসের টাইমে সেই অপরিচিত কলেজ ক্যাম্পাসের সাথে নতুন করে সম্পর্ক জোড়াতে পৌঁছে গেলাম। কিছুক্ষণ পর কে একটা সবাইকে ডাকছে, স্যার, অতিথি, কে নামও জানলাম না! চিনতেও পারলাম না ! আমাদেরকে বেঞ্চে বসতে বললেন, বসা মাত্র পাখির মতো আওয়াজ ছাত্র-ছাত্রীদের কন্ঠ পাখির মতো নয় তবে শব্দ পাখির আওয়াজের মতোই। আওয়াজ বন্ধ হলো। কয়েকজন ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী ফুল আর কলম নিয়ে আসলেন। ছেলেরা ছেলেদের, মেয়েরা মেয়েদের আমাদের প্রত্যেকের হাতে ফুল আর কলম তুলে দিচ্ছেন। ভারি আনন্দ লাগছে কারণ শিক্ষা জীবনে কখনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম দিন পদার্পণের সময় এভাবে কলম ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে পাঠ শুরু হয়ে গেলো কিন্তুু আমি ভয়ে কলেজে কোনো স্যারের সামনে দিয়ে সহজে হাটতাম না আবার ক্লাসেও দেখা সাক্ষাৎ করতাম না। তখন আমার বোন ছিলো কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সে আমাকে ক’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। তো কিছুটা সাহস পেয়েছি, প্রথমে যার সাথে পরিচিত হলাম তিনি শ্রদ্ধায় শিক্ষিকা নুরতাজ বেগম এবং পরে শ্রদ্ধায় শিক্ষক নেজাম উদ্দিন ও শিক্ষিকা বীনা রানী দাশ এর সাথে। নেজাম স্যার ও বীনা ম্যডামকে পেয়েছিলাম সর্বোকৃষ্ট প্রিয় জনের মতো করে, নেজাম স্যারের সঙ্গে দেখা হলে বলতেন সম্রাট কেমন আছো আর বীনা ম্যাডামের সঙ্গে দেখা হলে আমি যখন দাড়িয়ে আদাব ম্যাডাম বলতাম ম্যডাম তখন বলতেন বাবা কেমন আছো?
আমি বলতাম আমি ভালো আছি। আপনি? শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেমন স্নেহ করতেন, আমিও তাদের তেমন শ্রদ্ধা করতাম। পেয়ে ছিলাম দ্বিতীয় দফা বিদ্যালয় জীবনে পাওয়া স্নেস-ভালোবাসার চেয়েও মূল্যবান স্নেহ। যা আমি মনের ভাব দ্বারা পরিপূর্ণ রূপে প্রকাশ করেতে পারছি না।
কিন্তু এক বৎসর যেতে না যেতে করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া এবং আমার প্রতি স্নেহ-ভালোবাসা বিচ্ছিন্ন হওয়া আমার হৃদয়কে অস্পষ্ট ভাবে আজও কাদায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া মানে আমার জীবনের অধিকাংশ আনন্দ কেড়ে নেওয়া, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে কত না দুষ্টুমি, কত গল্প, কত লেখা খেলতাম, ক্লাস থেকে পালিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকার কত শাসন- অনুশাসনে শিকার হতাম এসব কিছু আকস্মিকভাবে বিদায় আমাকে আজও পূর্ণতা দিলো না। এটি আমার শিক্ষা জীবনের বৃহত্তম বেদনা। কারণ পূর্বে শিক্ষা জীবনে আমি তেমন কিছু বুঝতাম না। যখন শিক্ষা জীবন সম্পর্কে একটু বুঝতে পারছি ঠিক তখন খোদার লীলা খেলা সকলের শিক্ষা জীবনে দুর্ভাগ্য  নেমে আসে। ফিরে আসুক সে দিন, সুস্থ থাকুক প্রিয় কলেজ ক্যাম্পাস আমি এ প্রত্যাশায় রইবো।

আরও পড়ুন  লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং তিলোত্তমা’র কমিটি গঠন।

নামঃ শাহেনেওয়াজ উদ্দীন চৌঃ
কলেজঃ পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজে
এইচ এস সি ব্যাচঃ ২০২১
▪️
একদিন মানিক স্যারের সাথে পরিচয়। কথা-বার্তার শেষে স্যার বললো, Dishari camp-এ শিক্ষনীয় একটি অনুষ্ঠান হবে। বাঁশখালীর বিভিন্ন কলেজ অংশগ্রহণ করবে, তুমি অংশগ্রহণ করিও উপকার হবে। স্যারের কথা রাখতেই হবে। ঐ অনুষ্ঠানে প্রথম সাক্ষাৎ সাব্বির ইকবাল ইউএনও বাঁশখালী, দ্বিতীয় সাক্ষাৎ  লায়ন শেখর দত্ত, ইংলিশ টিচার নেপাল। তাঁদের সাথে খাওয়া দাওয়া, ছবি তোলা, আরও সাথে জড়ানো নানান স্মৃতি এখনো আমাকে নাড়া দেয়। অতীতকে কখনো পরিবর্তন, ভুলা, নতুন করে সাজানো বা মুছে ফেলা যায় না। শুধু গ্ৰহণ করা যেতে পারে। কলেজ জীবনের সেই দুষ্টুমি ভরা দিনগুলো, ক্যাম্পাসের কোনায় সেই আড্ডা কিংবা দলবেঁধে ঘুরে বেড়ানো, নিরবিচ্ছিন্ন সুখের সেই কলেজ জীবনটা আর কখনো ফিরে পাবো না।
কলেজ শেষ করেছি। কিন্তু এই মহামারির কারণে গত দেড় বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারিনি। পাইনি বন্ধু-বান্ধবের ভালোবাসা আর পাচ্ছিনা শিক্ষকদের মায়া-মমতার স্বাধ। থমকে গেছে পড়াশোনা। এই পড়াশোনার যে ঘাটতি রয়ে গেছে জানিনা তা আর পূরণ হবে কিনা! যখন বছরের পর বছর পার হবে তখন পরিচিত মুখ গুলো আস্তে আস্তে অপরিচিত হয়ে যাবে। জীবনের দিনগুলি সব শীতের পাতার মতো ঝরে শেষ হয়ে যাবে। এভাবে একদিন সব স্মৃতি রেখে চলে যাবো পৃথিবীর মায়া ছেড়ে। 
আকতার হোসাইন
বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ.
▪️
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি কয়েক দিন হলো।আগেই শুনেছি এই বিশ্ববিদ্যালয় নাকি খুবই সুন্দর। পাহাড় বেষ্টিত অপরূপ সবুজের সমারোহ। আজকে প্রথম ক্লাস হওয়ার পরে সিআর ঘোষণা দিয়েছে আর ক্লাস হবে না। ট্রেন আসবে দেড়টায়। এখনো হাতে যথেষ্ট সময় আছে।ভাবলাম বিশ্ববিদ্যালয়টা একটু ঘুরে আসি। বন্ধু একটা সহ ঘুরতে ঘুরতে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ক্রস করে সামনের দিকে প্রবেশ করলাম। বিশাল ভবন। সম্ভবত এটাই মনে হয়  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভবন। ভবনের নাম দেখলাম ড.আবদুল করিম ভবন। সমাজবিজ্ঞান অনুষদ যেহেতু নোবেলজয়ী  ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নামে, সুতরাং এটাও কোন বিখ্যাত ব্যক্তির নামেই হবে সেটা অনুমান করাই যায়। 
তারপরও কনফার্ম হওয়ার জন্য হাঁটতে হাঁটতে  গুগল মামার সাহায্য নিলাম। সার্চ করে তো আমি অবাক! এটা কি সত্যি!নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আনন্দে আত্নহারা হয়ে একপ্রকার চিৎকার করে উঠলাম।কারণ আমার বন্ধুটা আমাদের বাঁশখালী নিয়ে নানা কথা শোনায় প্রায়ই।ওকে বলার পর বললো ও জানতো না যে ইতিহাসবিদ ড. আবদুল করিম স্যারের জন্ম বাঁশখালীতেই।আমারও সত্যি জানা ছিল না এর পূর্বে। এর পর থেকে ও বাঁশখালী নিয়ে কিছু বলতে গেলেই আমি স্যারের উদাহরণ নিয়ে আসি।তখন ওর হেসে চুপ করে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না!বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের এই ঘটনাটা আমার মনে থাকবে আজীবন। 

রিদোয়ান আমিন 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইন্যান্স বিভাগ(২৬ ব্যাচ)
▪️
এসএসসি পাস করে ১৩ সালে ভর্তি হই পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজে। এই কলেজের শিক্ষকরা অনেক ভালো ও আন্তরিক।আমরা দুই বান্ধবী ছিলাম।একসাথে কলেজে আসা যাওয়ার পথে গল্প করতাম ও অনেক মজা হত। আমার জীবনে কোনো প্রোগ্রামে প্রথম অংশগ্রহণ হল এই কলেজে। প্রথমবার প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে পুরস্কার গ্রহণ, অতিথিবৃন্দ ও যারা পুরস্কার পেয়েছিল তাদের সবার সাথে ছবি তোলাটা সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল।কলেজে বার্ষিক মনীষাতে যেখানে একজনকে একটি করে লেখা জমা দিতে বলা হয়েছিল সেখানে আমি ভুলে দুটি জমা দিয়ে দিছিলাম।কিন্তু মনীষাতে আমার জমা দেওয়া কবিতা ও লেখা দুটোই প্রকাশিত হয়ে যায়।তখন খুব খুশি হয়েছিলাম।

কলেজে এসে সবাই ইংরেজি প্রাইভেট পড়ত।আমরা দুই বান্ধবীও পড়তাম তবারক উল্লাহ তারেক স্যারের কাছে। এই কলেজে এসে এমন একজন শিক্ষককে পাই উনার পড়াগুলো মনে এখনো গেঁথে আছে।পড়াগুলো এত ভালো লাগত যে এখনো মনে হয় জীবনে যেই স্যারটি নিখুঁতভাবে পড়া বুঝিয়েছেন উনিই তারেক স্যার।স্যারকে এখনো খুব মনে পড়ে।যদিও ১৫সালে এইচএসসি পাস করে চলে আসার পর আর কখনো স্যারের সাথে দেখা ও কথা হয়নি।যাই হোক তারেক স্যারের জন্য সবসময় দোয়া করি।মহান রাব্বুল আল আমিনের কাছে প্রার্থনা আমার কলেজের স্যারদের জন্য অনেক দোয়া ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

আসমা খানম লিজা
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ
এইচএসসি ব্যাচ-২০১৪
▪️
দুষ্ট ছেলের দল, ছন্নছাড়ার দল
দুষ্ট ছেলের দল, ছন্নছাড়ার দল”
এসএসসির পর পরবর্তী ৩মাস বাংলার নগরবাউল জেমসের গানের লাইনের মতো কেটেছে। যখন রেজাল্ট এলো বন্ধুরা সবাই কে কোথায় ভর্তি হবে সেটা নিয়ে সবার মধ্যে উচ্ছাস। সে উচ্ছাস আমাকে ছুয়ে যায়নি কারন আমি জানতাম আমাকে পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রী কলেজেই ভর্তি হতে হবে। অনেক অপারাগতার পর নির্ধারিত সময়ের দুইদিন আগে স্কুল ড্রেস পরা ছেলেটি হয়ে গেল সিভিল ড্রেসের কলেজ স্টুডেন্ট।
কলেজের পাশের গ্রামে বাড়ী হওয়াতে নিজেকে মনে মনে ক্যাডার ভাবতাম,মনে হতো সবকিছুই আমাদের। বড় ভাইয়ের ইউজ করা সেকেন্ড হ্যান্ড ব্যাগ কাধে নিয়ে বাড়ী থেকে রাজার দিঘী পার হয়ে কলেজ পুকুর পাড় দিয়ে সোজা একতলা ভবনের বিজ্ঞান বিভাগ ছিলো নিয়মিত গন্তব্য।
১ম বর্ষে সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার ছিলো কোন একটা বিষয়ের ক্লাশ না করলে কেউ কিছু বলতো না। পুরো দুই বছরে বেশী হলে ১০টার বেশি বাংলা ক্লাশ না করে আমরা সে সুযোগ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিলাম। এই সময়টাতে কলেজের পাড়ে বসে আড্ডা দিতাম। সেবার ১ম বর্ষ ফাইনালে পরীক্ষার হলে বাংলার ম্যাডাম খাতায় স্বাক্ষর করতে এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমরা আসলে এই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কি না(আসলে উনি উনার ক্লাশে আমাদের খুব বেশি দেখেন নি)! অধ্যাপক মফিজ উদ্দীন স্যারের কাছে রসায়ন পড়ার আনন্দ এখনো অনুভব করি। রেজাউল স্যার, ইসমাইল স্যার,কুতুবী স্যার/নুর তাজ বেগম ম্যাডাম পুরো দুই বছরের কলেজ জীবনে উনারাই ছিলেন আমাদের পরিবার। পাশাপাশি ইংরেজির বাবলা স্যার/তবারুক উল্লাহ স্যার,বাংলার কনক স্যার,জমির স্যার উনাদের ছাড়া বাকী স্যারদের কে কোন বিভাগের সেটাও ভালো করে জানতাম না।

জীবনে প্রথম বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করা, কলেজ ম্যাগাজিন মনীষায় লেখা প্রকাশ ছিলো প্রথম প্রাপ্তির ছোয়া। ২৬শে মার্চ, ২০১৪ সালে পুরো বাংলাদেশের সাথে লাখো কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করার স্মৃতিটা অসাধারণ। এর বাইরে পুরো কলেজ জীবন ছিলো একদম সাদামাটা।

দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত ইতিহাসবিদ  ডঃ আব্দুল করিম স্যারের হাতেগড়া প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হিসেবে আলাদা করে বলতে পারাটা অনেক আনন্দের।
লেখক;
মুহাম্মদ হাবিবুল ইসলাম

আরও পড়ুন  হান্নান হুজুরের মুকুটে আরো একটি পালক

◾সম্মিলিতভাবে ৫ম স্থান
আসাদুল হাকিম রিজয়
মোঃ ফয়সাল ইসতিয়াক শিহাব (মনি)
বিবি মরিয়ম চৌধুরী
এস এম সিফাত চৌধুরী
এম আরফাতুল ইসলাম নয়ন 



স্মৃতিময় কলেজ জীবন
মনে পড়ে সেই পুরানো  দিনের কথা। কলেজের সেই অতীত ভুলানো ব্যাথা। মনে পড়ে সেই  কলেজ জীবনে ক্যাম্পসের আড্ডা। যেখানে ছিল অতীতের বেশির ভাগ স্মৃতি। আমার অনেকটাই সময় কেটেছে চট্টগ্রামে। স্কুল জীবনে দীর্ঘ দশ বছর মধুর স্মৃতি  কাটিয়ে, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হই ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  কলেজে। সে এক অন্যরকম প্রতিষ্ঠান। আয়তনে, ডিপার্টমেন্ট-শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যায় বিশাল।এখানে শৃঙ্খলা, নিয়মকানুন, নিয়মিত ক্লাস, ঘন ঘন পরীক্ষা, সহপাঠ্যক্রম কার্যক্রম যেন এক নতুন জীবনের সন্ধান দিল। প্রথম প্রথম নতুন পরিবেশে অস্বস্তিকর মনে হয়েছিল। পরে এর কল্যাণকর দিক আমাকে অভিভূত করতে থাকে।

অ্যাডমিশন  রেজাল্টের পর ভর্তি হতে গিয়ে দেখি সবাই লাইনের পিছনে দাঁড়াতে চাইছে। মানবিকে  ছাত্র  ছিলাম  কারণটা না বুঝে বীরদর্পে এগিয়ে প্রথমদিকে ভর্তি হয়ে রোল নাম্বার “৯১৪ ” পেলাম। কী ব্যাপার, ছেলেগুলো হাসছে কেন? মজা বুঝলাম ক্লাস করতে গিয়ে। ডিগ্রী-অনার্স-মাস্টার্সের ক্লাস হয় তাদের নিজ নিজ ডিপার্টমেন্টে। আর একাদশ-দ্বাদশের পোলাপানরা থাকে দৌড়ের উপরে। প্রথম দিন,  প্রথম ঘন্টায় ইংরেজি। কলেজে প্রথম দিন একটু নিজের মধ্যে ভয় কাজ করছে। কারণ পরিচিত  তেমন কেউ ছিল না। ৯টা ৫০মিনিটে  দিকে ক্লাস রুমে প্রবেশ করার জন্য  অনুমতি  নিলাম। ক্লাসে সবাই দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। স্যারে অনুমতি ক্রমে ক্লাসে প্রবেশ করার পর দেখি কোথাও বেঞ্চ খালি নাই, বেঞ্চ খালি না থাকার কারণে মনে হচ্ছে  স্যার ও আজকে আমাকে পাইছে। ক্লাস শুরু  হল আমাকে নিয়ে। নানা রকম প্রশ্নের পর বসার সুযোগ  হলো, একটা মেয়ের পাশে। নাম ফারজানা তাবাসসুম। স্যার আমাকে দাড়াতে  বলল।জিজ্ঞেস  করল, সহপাঠীর পাশে বসে আমার অনুভূতি  কী? আমি তো লজ্জায় কথা বলার সাহস হারিয়ে  ফেলছি। মোটামুটি  ঐ দিন আমরা ক’জন নিয়ে স্যারের হাস্যোজ্জ্বল ক্লাস।

কলেজের দুইদিকে দুইটা গেইট। সবসময় খোলা। তারপরও কেউ ক্লাস মিস দিত না তেমন। কারণ ক্লাসেই আসল মজা। তাও কেউ কেউ কোন কোন বিষয়ে ননকলেজিয়েট-ডিসকলেজিয়েট হয়ে যেত। ইয়ার ফাইনালের রেজাল্টের সঙ্গে সে খবরটাও অভিভাবকের কাছে পোস্ট করা হত। বুদ্ধিমান ছেলেরা এজন্য আগে থেকেই সুবিধামত “স্থায়ী ঠিকানা” দিত। “গার্জিয়ান কল” হলে সাজানো বাপ-চাচা হাজির করত। দুএকজন আবার ধরা পড়ে অন্যদের হাসির খোরাক হতো। ইউনিফর্ম ছিল ছেলেদের জন্য সাদা শার্ট আর মেয়েদের সাদা এপ্রোন। সাদা শার্টের নীচে রঙিন টিশার্ট পরে দুটো বোতাম খোলা রেখে ছেলেরা ফ্যাশনেবল
থাকার চেষ্টা করতো। একবার “চোখ ওঠা”র ধুম পড়ল সবার; ওই ছুতোয় কালো চশমা পরে থাকার সুযোগ হারাতে চাইলোনা অনেকে। ভালবাসি খুব ভালবাসি ফেলে আসা কলেজ জীবনে হাজারো স্মৃতিকে । হ্যাঁ রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলি থেকে নয়, নজরুলের অগ্নিবীণা থেকে নয়, শরৎ বাবুর দেবদাস থেকেও নয়, আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বলছি- “ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ আমার স্বপ্নের রাজমহল, আমার হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসার ক্যাম্পাস, আমার স্মৃতির পৃষ্ঠায় এক স্বর্ণালী অধ্যায়।”

লেখকঃ আসাদুল হাকিম রিজয়
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ
সদরঘাট, চট্টগ্রাম,।
ব্যাচ,৫৩.
▪️
তখন ২০২০ সাল আমি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা দিই। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই/তিন সপ্তাহের পর দেশে দেখা দিলো মহামারী। যার ফলে বন্ধ হয়ে যায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বন্ধ হয়ে যায় আমাদের ফলাফল ঘোষণা । কয়েক দফায় ফলাফল দেওয়ার কথা থাকলেও পরে পরীক্ষার নব্বই দিন পর ফলাফল পাবলিশ হয়। আল্লাহর রহমতে ও পরিবারের সকলের দোয়ায় আমি জিপিএ-৫ পেয়েছি। এর পর থেকে ভালো একটা কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে জাগে। সব ইচ্ছা পূর্ণ হওয়ার মতো না। মহামারীর ফলে ভর্তির কোনো আনাগোনা নেই। অবশেষে ফলাফলের সত্তর দিনের মাথায় শুরু হয় কলেজ আবেদন এবং এর পর ফলাফলের ভিত্তিতে আমার কলেজ সিলেকশন হয় হাজেরা-তজু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। তার কয়েকদিন পর কলেজে এডমিশন নিলেও কলেজের শ্রেণী কার্যক্রম করার সুযোগ হয় নি। মাঝে মাঝে অনলাইন ক্লাস করলেও স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করে মনের চাহিদা পূরণ করতে পারি নাই। ছোট বেলা থেকে বড়দের কাছ থেকে শুনেছি কলেজ জীবন অনেক আনন্দের কিন্তু সেই আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ হয়ে উঠে নি।সবার কাছ থেকে শুনতাম ফার্স্ট  ইয়ার ডেম কেয়ার। তখন থেকে কিউরিসিটি কাছ করতো ডেম কেয়ার কী রকম হয়।ভাগ্যিস ফাস্ট ইয়ার চলে গেছে কিন্তু ডেম কেয়ার কী তা বুঝতে পারি নি। যদি আমার পরবর্তী প্রজন্ম আমার কাছ থেকে কলেজ লাইফের প্রথম বছরের কয়েকটি কথা বা ফার্স্ট ইয়ার ডেম কেয়ার কী জানতে চাই।তাইলে আমার কিছু বলার থাকবে না।শুধু বলতে পারব আমার ফাস্ট ইয়ার কেটেছে হোম টাউনে আর বলতে পারব মাঝে মাঝে অনলাইন ক্লাসে স্যার পড়ার সময় অন্যরা গান গাইতে আর রোল কল করার সময় একজনের রোল অন্য জন বলে দিতো। এর পর পড়ালেখার নামে দেওয়া হয় অ্যাসাইন্টমেন্ট যা অন্যের কাছ থেকে হুবহু অনুকরণ করে লিখা। আমি অ্যাসাইন্টমেন্ট লিখতাম উত্তর দেখে দেখে প্রশ্ন দেখে নয়। এখন পর্যন্ত অনেক অ্যাসাইন্টমেন্ট লেখা হয়েছে কিন্তু একটারও প্রশ্ন দেখি নাই। এইভাবে চলতে থাকল আমার কলেজ জীবন। পরিশেষে আল্লাহর কাছে পরিয়াদ চাই এই যে, আমাকে তথা আমাদের ২০ব্যাচকে কলেজ জীবনের একটু স্মৃতিময় করতে অতি তাড়াতাড়ি  সুস্থ হোক এই পৃথিবী  আর খুলে দিক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ধন্যবাদ সবাইকে,
লেখক,
মোঃ ফয়সাল ইসতিয়াক শিহাব (মনি) 
একাদশ শ্রেণী,বিজ্ঞান বিভাগ
হাজেরা-তজু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ
গ্রামঃ পশ্চিম ইলশা,ডাকঃ ইলশা 
৪নং বাহারছড়া ইউনিয়ন, ৮নং ওর্য়াড, বাঁশখালী,চট্টগ্রাম
▪️
স্কুল জীবনের চেয়ে কলেজ জীবনটা আমার নিদারুণ কেটেছে।  যখন শ্রাবণ মাসে বৃষ্টি হতো তখন ছাতা হাতে আধো ভিজে জলকদরের উঁচু ব্রিজটা পেরিয়ে কলেজে যেতাম। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতাম কৃষ্ণচূড়ার লাল লাল ফুলঝুরায়। নিবিড় হিমেল বায়ুর পরশে আঁকা ছিলো পুকুরের ঘাট, হতে প্রতিটি অলিগলি।  একটা কি দুইটা ক্লাস ফাঁকি মেরে নিরবে দাড়িয়ে থাকা,ভাবনার দ্বিপ্রহরে নিজেকে হারিয়ে ফেলা। এমনকি শ্রদ্ধেয় মহাশয় বৃন্দদের মায়ার জালে আটকে যাওয়ার অপহৃত স্মৃতি আমৃত্যু নশ্বর। এই পৃথিবীতে অবিনশ্বর হয়ে হৃদয়ের মণিকোঠায়  স্বরলিপি হয়ে থাকবে। শতেক শব্দে যাকে গাঁথা যায়না সেই হলো পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ। যেথায় নিজেকে খুঁজে পেতাম নতুনত্বের দীঘল ছোঁয়ায়। আমি জলকদরের সূর্যাস্ত দেখিনি কিন্তু প্রিয় প্রাঙ্গণে আমি সবার স্নেহ আর ভালোবাসা পেয়েছি। জীবন বলতেই স্মৃতি। বিগত সব অতীত-স্মৃতি। সময়ের নিরিখে ভুলে যাওয়া যায়না  এমন স্মৃতির স্পট হৃদয়ে খচিত সোনালী অক্ষরে।

নাম: বিবি মরিয়ম চৌধুরী
প্রতিষ্ঠান: পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ
ব্যাচ নং: ২০১৯
▪️
আমার কলেজ জীবন কেটেছে   সরকারি সিটি কলেজ,চট্টগ্রাম । স্কুলের পথ চুকিয়ে যখন কলেজ জীবনে পদার্পন করলাম তখন অনেকটা ভয়ে ভয়ে ছিলাম। আজ ও কলেজের প্রথম দিনের কথা মনে পরে। কারণ খুবই অপরিচিত এবং একটি ভিন্ন পরিবেশ ছিল আমাদের কলেজের। প্রথম প্রথম প্রতি দিন খুব খালি খালি লাগতো। কারণ আমার বন্ধু  ছিলোনা। নিজেকে খুব একা একা মনে হতো। কিন্তু আস্তে আস্তে পরিবেশ পাল্টাতে লাগলো। প্রথম প্রথম নিজেকে খুব এক মনে হতো। ধীরে ধীরে নতুন নতুন বন্ধু  হলো। সকলে মিলে কলেজের প্রতিটা অনুষ্ঠান খুব উৎসাহ সহকারে পালন করেছি। হাসি কান্না পড়ালেখা সব মিলিয়ে আমাদের প্রতিটা দিন ভালোই কাটছিলো। সকলের সাথে প্রতিটাদিন কত মজাদার করে কেটেছে তা বলার অন্ত নাই।আমাদের কলেজে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণ করার উপর জোর দেওয়া হতো না। বরং একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলার জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিছুই শিখানো হতো আমাদের কলেজে।
দেখতে দেখতে হাসি আনন্দের দিনগুলো আসতে আসতে অভিবাহিত হতে লাগলো। কলেজ এর দিনগুলো ঘনিয়ে আসতে লাগলো।পরীক্ষা ঘনিয়ে আসতে লাগলো। পরীক্ষার পর কলেজ জীবনের ইতি টানতে লাগলো। এখনো মনে পড়ে কলেজ জীবনের সেই মধুর স্মৃতিগুলো। এখনো কলেজের সেই বন্ধুদের সাথে দেখা হলে কলেজ জীবনের স্মৃতি  ভেসে উঠে আমাদের আড্ডায়।

নামঃ এস এম সিফাত চৌধুরী
প্রতিষ্ঠানের নামঃ সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম ব্যাচঃ এইচএসসি ১৭
▪️
আমি এম আরফাতুল ইসলাম নয়ন। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে গ্রামের সাদাসিধা জীবন ছেড়ে সেদিন আসছিলাম কলেজ জীবনে পা রাখতে। দিনটি বেশ রৌদ্রময় ছিল
একাকীত্ত্ব ভ্রমণে,শাহ্ আমানত ব্রীজের এপারের একটি ঘটনা কলেজ জীবনের স্মৃতির একটি অংশ। রঙ্গিন শহর, ইট পাথরের দুনিয়া সব মস্ত মস্ত মানুষের বসাবাস। কেমন জানি ভয় ভয় কাজ করছিল। সব প্রতিকূলতা পার করে ভর্তি হই ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। কলেজের প্রথম দিন সব কিছুই নতুন এবং ভয়ের এমনটা কাজ করছিল মনে। আস্তে আস্তে মিশি মফস্বল থেকে আসা নগরের সকল কিছুর সাথে। রাকিব,ইমন,মাহফুজ,আশরাফ,আমি,আমরা পাঁচজন বন্ধু সব সময় একসাথে থাকতাম। একসাথে পড়াশোনা একসাথে আড্ডা। প্রাইভেট শেষে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে ক্রিকেট খেলা। খেলা শেষে নিউমার্কেটের গার্ডেনে আড্ডা। টং এর দোকানে চা বিস্কিট খাওয়া।৫-৭ টাকার ভাড়ায় বাসে ঝুলে বাসা থেকে কলেজ, কলেজ থেকে বাসায় আসা যাওয়া। সব কিছুর মধ্যে একটা প্রাপ্তি এবং তৃপ্তি ছিল। কলেজের শেষ সময়ে ইচ্ছে আর স্বপ্ন গুলো বড় হতে লাগল আড্ডা মাস্তির সময় কর্তন হতে হতে বড় হয়ে গেছি।আনন্দ গুলো হারিয়ে যাই বন্ধুদের সাথে।স্বপ্ন আর বাস্তবে পরিণত হয়েছি বহুবার।

এম আরফাতুল ইসলাম নয়ন
ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।
এইচএসসি -২০১৭ ইং
▪️
সত্যি কলেজ জীবনটা এতো সুন্দর ও মধুময় হয় কলেজে না পড়ে জানতাম না, একটু পেছনের কথা বলি” আমি যখন প্রথম ক্লাস করতে যায়  কলেজে এক অদ্ভুত ভয় কাজ করতেছিল মনের  ভিতর মনে হচ্ছে কলেজে যাচ্ছি না’ যাচ্ছি এক ভূতের বাড়িতে সব ভয় কাটিয়ে ডুকে গেলাম ক্লাসে,আস্তে আস্তে সবার সাথে পরিচয় হচ্ছি, এমন করতে করতে কয় একদিন কেটে যাওয়ার পর পরেই মনে হলো আমি স্বাধীন কোনো ভয় নেই,বন্ধু বান্ধবীদের সাথে আড্ডা ক্যান্টিনে নাস্তা করে করে আড্ডা দেওয়া  ইত্যাদি অসাধারণ স্মৃতি  এটা  ভুলবার নয়, কলেজর প্রতিটি স্যার ও সহপাঠী সবাইকে খুব মিস করি এবং বেশ মনে পড়ে সময়ে সময়ে সব স্মৃতি, কলেজের একটা হাস্যকর ইতিহাসের কথা বলি! আমি আর বন্ধুরা মিলে কলেজে কলেজের  কেন্টিনের নাম রেখেছি ও লিখেছি দেওয়ালে (কাকা কেন্টিন। এখনো সেই লেখাটা দেওয়ালে দেখা যায় সব মিলিয়ে কলেজের সময়, দিন গুলো ভালো কাটিয়েছি যা আমাদের সকলের জীবনে একটা ইতিহাস ও স্মৃতি হয়ে থাকবে।
পরিশেষ বলি আমার সকল বন্ধু যেখানে থাকুক ভাল থাকুক এই দোয়া করি।
ধন্যবাদ
মুঃ রমিজ উদ্দীন
মানবিক শাখা
ব্যাচ-১৮
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ