মুহাম্মদ সিরাজুল কবির ১৯৫১ সালের ২৮ জুলাই বাঁশখালীর চেচুরিয়া গ্রামে এক সম্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম মরহুম মুন্সি মোজাম্মেল হক।বৈলছড়ি নজমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় ও বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত কালে তিনি একজন ছাএনেতা হিসেবে সকল আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট থেকে সাংবাদিকতায় বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহন করে তদানিন্তন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার থেকে সনদ পএ গ্রহন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ কাউন্সিল থেকে সমাজকর্মীদের নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ কোর্স বাস্তবায়ন করে সনদপএ লাভ করেন।তিনি জাতীয় সমাজকল্যাণ কাউন্সিল, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, লায়ন্স ক্লাব্স ইন্টারন্যাশনাল, সমাজ সেবা অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাব ও চট্টগ্রাম রাইফেল ক্লাব থেকে শেষ্ঠ সমাজসেবী সন্মাননা পদক লাভ করেন।
সমাজসেবা ক্ষেএে অন্তরায় সমুহ দূরিকরণে, সেচ্ছাসেবী সংস্থার রেজিষ্ট্রেশন দানে দীর্ঘসূএিতা, পুলিশী তদন্ত প্রথা বাতিলে,অনুদান বন্টনে অনিয়ম দূরীকরণে এবং সর্বস্তরের সরকারী কমিটিতে সমাজকর্মীদের অন্তর্ভুক্তি আন্দোলনে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব সমগ্র চট্টগ্রামে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
১৯৭২ সালে আনচারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন,পরে বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পএিকায় সাংবাদিকতা করেন পরবর্তীতে সোনালী ব্যাংকে যোগদান করে অফিসার পদে কর্মজীবন শেষ করেন।
১৯৭৪ সালে বাঁশখালীতে কুলিন সংসদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজসেবার মহানব্রত পালনে নিরলস প্রচেষ্ঠা চালিয়ে আসছিলেন। তিনি বিভাগীয় সমাজকল্যাণ ফেডারেশনের মহাসচিব, চট্টগ্রাম সমাজকল্যাণ এাণ কমিটির সভাপতি, অপরাধী সংশোধন ও পূর্নবাসন সংস্থার সহ-সভাপতি, জেলা সমাজকল্যাণ সংস্থা সমন্বয় ও স্মল ইসলামিক উন্মা’র প্রতিষ্ঠাতা সহ তিনি অসংখ্য সমাজসেবী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। সমাজকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও স্বর্নপদক প্রদানে তিনি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।
জনাব সিরাজুল কবির যাকাত ভিত্তিক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ৩৫ বছর ধরে যাকাতের উপর ব্যাপক ভাবে সভা সেমিনার করে ভিক্ষা বৃত্তির পরিবর্তে যাকাতকে পূর্নবাসন খাতে ব্যায় করার নিমিত্তে চট্টগ্রামে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।
এবং যাকাত দাতা ও গ্রহিতা এ বিষয়টি বর্তমানে হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছেন এবং ইহা অনুসরণ করেছেন। তিনি যাকাত ফান্ড গঠনের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবার পূর্ণবাসন প্রকল্পের আওতায় ১০০০ এর অধিক পরিবারকে ভ্যান গাড়ি,রিক্সা, সেলাই মেশিন,পানির মোটর,ধানের মেশিন, দুধের গাভী, ছাগল, গৃহ নির্মান সামগ্রী, কৃষি কাজের সমগ্রী ও গরীব মেধাবী ছাত্রদের শিক্ষা সাহায্য ইত্যাদি দিয়ে স্বাবলম্বি করে নিজের পায়ে দাঁড়িতে সহায়তা করেছেন।
তিনি একজন সৎ, অমায়িক, উদার, ত্যাগি,কর্মঠ,নিরলস, পরিশ্রমি,পরোপকারী, ন্যায়নীতির অধিকারী ও খোদাভীরু পরহেজগার লোক ছিলেন।
তাঁহার একমাএ মেয়ে তাসনীম জাহান (বিসিএস) এডমিন ক্যাডারে যোগদান করে বর্তমানে বান্দরবান সদরের এসি ল্যান্ড হিসেবে কর্মরত আছেন।
বেগম সিরাজুল কবির বর্তমানে সকলের দোয়ায় সুস্থ ভাবে আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন।
জনাব সিরাজুল কবির ২০১৭ সালে ১৬ই মে ইন্তেকাল করেন, (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) তিনি আমাদের স্মৃতির মাঝে বেঁচে আছেন, বেঁচে থাকবেন চিরকাল।
মহান আল্লাহ পাক সিরাজ ভাইকে চির প্রশান্তির স্থান জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন………… আমিন।
লেখক: সেক্রেটারি, বাঁশখালী উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, দুদক, বাংলাদেশ