সাম্প্রতিক সময়ে বাঁশখালী নামটা গণমাধ্যমের বিমাতা সুলভ আচরণের কারনে নেতিবাচক শিরোনামে বার বার উঠে আসলেও। এই বাঁশখালীতে জন্মেছেন ভুবনজয়ী মনীষীগণ। সুফী সাধক থেকে শুরু করে অনেক জ্ঞানতাপস, সমাজ সংস্কারকের জন্মভূমি এই বাঁশখালী। আজ তুলে ধরার চেষ্টা করব প্রবাদপ্রতিম তেমন এক আলেমেদ্বীন এর কথা। ‘ক্বেরামতুল আউলিয়ায়ে হক্বুন ” ( প্রবাদ)
পীরে কামেল মোর্শেদে বরহক,ওস্তাজুল আছাতেজা শাহ্ ছুপি হযরতুলহাজ্ব মওলানা এলাহী বক্স রহঃ ১৯০১ সালে বাঁশখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন । পুঁইছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা পরবর্তীতে চট্টগ্রামের দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসা হতে ১৯৩০ সালে ফাজেল পাশ করে মিরশ্বরাই লতিফিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে পেশা জীবনে প্রবেশ করেন। সেখানে দু’বছর শিক্ষকতার পর পুঁইছড়ি’র প্রখ্যাত জমিদার হাজী ইজ্জত আলী চৌধুরীর আহবানে ১৯৩৩ সালে পুঁইছড়ি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত হন । সেখানে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বৎসর শিক্ষকতা করেন । ১৯৫৫ সাল হতে ১৯৫৭ সাল হুজুর বড়ঘোনা রহমানিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন । ১৯৫৮ সালে আবার পুঁইছড়ি মাদ্রাসার হাল ধরেন । এ সময় হুজুর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত করেন। হুজুর ১৯৮০ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন । পুঁইছড়ি মাদ্রাসায় তিনি শেষ ১৫ বৎসর সুপারের দায়িত্ব সহ ৫৭ বৎসর শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন ।
ইলমে ত্বরিকতের দীক্ষা অর্জনে তৎকালীন সময়ের মুজাদ্দেদিয়া ত্বরিকার শেখুল মাশায়েখ রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরীকতের পীর পীরে কামেল মওলানা নজির আহমদ রহঃ এর শরণাপন্ন হন। এবং ওখান হতেই আধ্যাত্মিক দীক্ষা অর্জন করেন । পীর সাহেব ক্বেবলা পরলোক গমন করলে উপমহাদেশের স্বনামধন্য মোরশেদে বরহক মওলানা আব্দুস সালাম আরকানী রহঃ হতে ত্যাগ ও কঠিন সাধনায় মুজাদ্দেদীয়া ত্বরীকায় ১৯৫০ সালে খেলাফত প্রাপ্ত হন । পুঁইছড়ি মাদ্রাসায় শিক্ষকতার সময় মোদারেছে আওয়াল হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন ।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে হুজুর আধ্যাত্মিক জগতের আল্লাহ’র মহান ওলী হিসেবে সুপরিচিত হয়ে চতুর্দিকে হুজুরের সুনাম ছড়িয়ে পড়লে টেকনাফ হতে ফেনী নদীর এপারের লোকেরা পর্যন্ত হুজুরের দোয়া ও সান্নিধ্য পেতে ছুটে আসতেন শেখেরখীলের প্রান্তিক জনপদে ।
১৯৯৪ সালের ১৯ শে ডিসেম্বর হুজুরের ওফাত হয় । জানাযায় দাড়ানো লাখো লাখো মানুষের উপর লাখ লাখ অপরিচিত পাখি ঘুঁম ঘুঁম আওয়াজে উড়তে থাকে । জানাযার সালাম ফেরানোর পর সকলের অগোচরে পাখি গুলো কোথায় হাওয়া হয়ে যায় । পাখি গুলো চলে যাওয়ার পর উপস্থিত লাখো মানুষের সম্বিত ফিরে হঠাৎ কোথায় গেল এতগুলো পাখি ???
হুজুরের অসংখ্য কেরামতি আছে, একবার মক্কায় এক লোক হজ্ব করতে গেলে হুজুরের সাক্ষাৎ পায় হজ্বে। সে মনে করেছে হুজুরও হজ্জ্বে গেছেন। দেশে এসে জানতে পারেন হুজুর হজ্বে যাননি তাহলে ওনি কে ? তিনি অনেকটা বেহুশ হবার অবস্থা। এই মহান সাধককে আল্লাহ জান্নাতের সর্বোচ্চ মক্বাম দান করুন । আমিন